কলাপাড়া পৌরশহর অটোচালকদের দখলে, নিত্য ঘটছে দুর্ঘটনা
প্রথম পাতা »
সর্বশেষ »
কলাপাড়া পৌরশহর অটোচালকদের দখলে, নিত্য ঘটছে দুর্ঘটনা
মেজবাহউদ্দিন মাননু, কলাপাড়া থেকে॥
কলাপাড়া পৌরশহর ব্যাটারিচালিত অটো বাইক এখন প্রাণঘাতী আতঙ্কিত যানে পরিণত হয়েছে। নিত্য ঘটছে দুর্ঘটনা। সর্বশেষ গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব প্রভাষক নেছারউদ্দিন আহমেদ গুরুতর জখম হয়েছে। শুক্রবার রাতে শেখ কামাল সেতুর সংযোগ সড়কে তিনি দুর্ঘটনাকবলিত হন। তার এক হাতের কব্জি বরাবর ভেঙ্গে গেছে। অটোচালকের অদক্ষতায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। অটো চালকদের নিয়ন্ত্রণে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ চরম উদাসীন রয়েছেন। ইতোপুর্বে পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলমগীর কবির অটো দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। হাসপাতালের স্বাস্থ্যপরিদর্শক নেছারউদ্দিন আহমেদও একই পরিণতির শিকার। আরও এক শিশু মারা গেছে। আহত হয়েছে অসংখ্য। এক শ্রেণির অদক্ষ চালক অটো চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। যাত্রীতে ঠাসা বোঝাই করে চালাতে গিয়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। শিশু-কিশোর চালকের সংখ্যা প্রায় দেড় শ’। ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এখন শহরে অটোর কারণে নাগরিকদের চলাচল করতে ভীতিকর পরিস্থিতিতির শিকার হতে হয়। শহরের সদর রোডে প্রায় সময় অটোর কারণে যানজট পর্যন্ত লেগে যায়। রাস্তার মাঝে অটো থামিয়ে যাত্রী তোলার কারণে এমন অবস্থা হচ্ছে। কলাপাড়া পৌরসভার দেয়া তথ্যানুসারে প্রায় ৬০০ অটোবাইক পৌরশহরে চলাচল করছে। একাধিক শ্রমিক সংগঠন (সরকারি দলের নিয়ন্ত্রিত) এর থেকে চাঁদা আদায় করছে। লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য হয় এর থেকে। ৬০০ অটো থাকলেও লাইসেন্স রয়েছে ৪৩০টির। যার থেকে পৌরসভা তিন হাজার টাকা করে আয় করেছে ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। আর নবায়ন বাবদ দুই হাজার করে বছরে আয় করছে আট লাখ ৬০ হাজার টাকা। নতুন লাইসেন্স ও নবায়ন করে পৌরসভার আয় হলেও অটোচালকদের নিয়ন্ত্রণে পৌরকর্তৃপক্ষের নেই কার্যকর কোন পদক্ষেপ। ফলে নাগরিক ভোগান্তি বাড়ছে। প্রাণহানিসহ গুরুতর জখমের মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার পৌরসভার টিএলসিসির একাধিক সভায় কাউন্সিলরসহ অটোচালক সমিতির নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দিয়েছেন, কিন্তু তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। আবার অটোচালকদের সংগঠন নিয়ন্ত্রণকারীরা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী থাকায় বেপরোয়াভাবে চলছে অটোচালকরা। শহর ছাড়াও কলাপাড়া পৌরসভা থেকে বিভিন্নমুখী রুটে চলাচলকারী অটোও চলছে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে। সর্বোচ্চ ছয়জন চলাচলের সুযোগ থাকলেও যাত্রী টানা হচ্ছে আটজন। গাদাগাদি করে বসতে হয়। যেন যাত্রীরা এদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। যাত্রীদের দাবি এসব অটো চলাচলে নিয়ম-কানুন মানার ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। নইলে দিনকে দিন দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বাড়বে। আর অপ্রাপ্তবয়ষ্ক চালকদেও নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৪৮:২৫ ●
৮১৪ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)