ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিল করা হলেও প্রতিবন্ধীদের কোটা বহাল আছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
তিনি বলছেন, প্রশাসনিক আদেশ দিয়ে আইন কখনও অতিক্রম করা যায় না; প্রতিবন্ধীদের জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কোটা ছিল, তা ‘সেভাবেই আছে’। তবে প্রতিবন্ধীদের কোটা কীভাবে কার্যকর হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা তার কথায় পাওয়া যায়নি। ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩’ এবং ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা বিধিমালা, ২০১৫’ এর আলোকে প্রতিবন্ধী বিষয়ক জাতীয় কর্ম-পরিকল্পনার খসড়া সোমবারের মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন পায়। সেই সিদ্ধান্ত জানানোর সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে একজন সাংবাদিক জানতে চান কর্ম-পরিকল্পনায় প্রতিবন্ধীদের জন্য চাকরির কোটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না? জবাবে শফিউল বলেন, এটা আলোচনা হয়নি। তবে আইনে যে কোটা আছে সেটা বাদ দেওয়া হয় নাই। আমাদের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অর্ডার দিয়ে আইন কখনও সুপারসিড হয় না। প্রতিবন্ধীদের জন্য কত শতাংশ কোটা আছে- জানতে চাইলে শফিউল বলেন, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কোটা ছিল।
বিগতবছর পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ বরাদ্দ ছিল। ওই পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের একটি অংশের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দেয় সরকার। কমিটি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল করে পুরোপুরি মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করলে গেল বছরের ৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভা তাতে সম্মতি দেয়। পরদিন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংশোধন করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরপর ৪০তম বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও কোটা না রাখার সিদ্ধান্ত নেয় পিএসসি। তাহলে প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা কীভাবে থাকছে- এই প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, (কোটা) যা ছিল তাই আছে। সরকার কোটা বাতিলের পরিপ্রত্র জারি করার পর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য ৫ শতাংশ কোটার দাবিতে নভেম্বরে শাহবাগ মোড়ে সমাবেশ করে প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীরা। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্টোবরে এক অনুষ্ঠানে বলেন, কোটা বাতিল করা হলেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীরা সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সব সময় অগ্রাধিকার পাবেন। অবশ্য জোরালো আন্দোলন হলে নতুন করে কোটার ব্যবস্থা হতে পারে বলেও সে সময় ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এফএন/এমআর