ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
দলে ভাই জি এম কাদেরের যেসব পদ কেড়ে নিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ, তার প্রায় সবই ফেরত দিলেন। দুদিন আগেই জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যানের পদে ফেরত আনা হয় কাদেরকে; শনিবার (৬ এপ্রিল) নিজের অবর্তমানে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের জন্যও তাতে মনোনীন করেন এরশাদ।
সিদ্ধান্ত ঘন ঘন পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত এরশাদ শনিবার এক ‘সাংগঠনিক নির্দেশে’ জিএম কাদেরকে উত্তরসূরি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ২২ মার্চ তারিখে আমার স্বাক্ষরিত একটি সাংগঠিক নির্দেশ জারি করেছিলাম, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল। ওই সাংগঠনিক নির্দেশ অত্র সাংগঠনিক নির্দেশ দ্বারা বাতিল ঘোষণা করছি। আমি আবারো জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আমার অবর্তমানে বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিদেশে থাকাকালীন সময়ে পার্টির বর্তমান কো চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। অত্র সাংগঠনিক নির্দেশ দ্বারা পুনর্বহাল করলাম।
এরশাদ বলেন, আমার অবর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিদেশে থাকাকালীন সময়ে পার্টির কো চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এরশাদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি ভাই জি এম কাদেরকে দলের ‘ভবিষ্যৎ চেয়ারম্যান ‘হিসেবে ঘোষণা দেন। ১ জানুয়ারি দল প্রধানের সে সিদ্ধান্তে ‘নাখোশ’ ছিলেন দলের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা। দলের এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় দলের জ্যেষ্ঠ কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদের সঙ্গে ‘দ্বন্দ্বের’ কথা নিজেই স্বীকার করে নিয়েছিলেন জি এম কাদের। দলের সভাপতিম-লীর একাধিক সদস্য এ সময় জি এম কাদেরকে হটাতে ‘চেষ্টা করেছিলেন’ বলে জানান দলের কজন জ্যেষ্ঠ সদস্য।
পরে ২২ মার্চ সাংগঠনিক কার্যক্রমে ব্যর্থতা ও দলে বিভেদ তৈরির অভিযোগে জি এম কাদেরকে বিগত ২২ এপ্রিল দলের কো চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেন এরশাদ। তাকে সাংগঠনিক সব কার্যক্রম থেকেও বিরত করেন তিনি কেড়ে নেওয়া হয় দলের উপনেতার পদ। তবে বহাল থাকে সভাপতিম-লীর পদ। ভাইকে সরিয়ে স্ত্রী রওশন এরশাদকে জাতীয় সংসদে দলের উপনেতা করেন এরশাদ। এরশাদের এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন রংপুর বিভাগের নেতারা।
দলের সভাপতিম-লীর সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নেতৃত্বে তারা সিদ্ধান্ত নেয়, জি এম কাদেরকে পুনর্বহাল না করলে তারা একযোগে পদত্যাগ করবেন। মোস্তাক জানিয়েছেন, ৩ এপ্রিল তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এরশাদ জি এম কাদেরকে আবারও স্বপদে বহালের সিদ্ধান্ত নেন এরশাদ। পুরনো ‘দ্বন্দ্ব’ নিরসনের আভাস দিয়েছেন রওশন এরশাদও। কদিন আগে দলের যুব সংগঠন জাতীয় যুব সংহতির এক অনুষ্ঠানে রওশন এরশাদ ও জি এম কাদেরকে দেখা গেছে একমঞ্চে। দলকে ক্ষমতায় নিতে একযোগে কাজ করার ঘোষণা দিয়ে রওশন এরশাদ বলেছেন, তাদের দলে ‘কোনো দ্বন্দ্ব বা বিভেদ নেই’। এরশাদের এই সিদ্ধান্ত বদলের বিষয়ে মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এফএন/এমআর