জামালপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে এখনো কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি। সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে আবেদন করা হলে তাঁর মুক্তির বিষয়ে সরকার চিন্তা করবে।
শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় বাহাদুরাবাদ নৌ থানার নতুন ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, প্যারোলে মুক্তি পেতে হলে তাঁকে (খালেদা জিয়া) একটা কজ দিয়ে, একটা কারণ দর্শিয়ে আবেদন করতে হবে। সেই আবেদনটা এখনো আমাদের কাছে আসেনি। আবেদন এলে তারপর আমরা চিন্তা করব তিনি যাবেন কি যাবেন না। এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আরো বলেন, দেখুন, বিরাট পুলিশ বাহিনী। পুলিশ বাহিনীর মধ্যে দুই এক হাজার পুলিশ যদি অন্যায় কাজ করে থাকেন, তার জন্য আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হচ্ছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। পুলিশ হোক, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হোক, যেই হোক আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আমলে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সেটা বারবার আমাদের দেশের মানুষ টের পেয়েছে, প্রমাণ পেয়েছে। আমাদের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে দুই-একজন যদি অন্য ধরনের লোক থাকে, যারা নাকি পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করে, তারা আইনের ঊর্ধ্বে নয়, তাদের বিচার হবে।
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোজাফ্ফর হোসেন, জামালপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ফরিদুল হক খান দুলাল, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মোখলেছুর রহমান, নৌপুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শেখ মুহাম্মদ মারুফ হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত ১ এপ্রিল দুপুরে ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানে সেখান তাঁর চিকিৎসা চলছে। এরপর গুজব ছড়ানো হয়, খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি পাচ্ছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয় নিয়ে তিনি ও তাঁর পরিবারের কেউ কোনো আবেদন করেননি। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকেও প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি বলে জানান তাঁর আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন। বিগত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সমিতির বিদায়ী কমিটির সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার খোকন এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি শুধু গণমাধ্যমেই আমরা জেনেছি।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে এটা একটা কৌশল হতে পারে। সরকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। আইনজীবী সমিতির বিদায়ী সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সরকারের সদিচ্ছা নেই। রাজনৈতিক মামলা দিয়ে তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। তাঁকে দিন দিন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। জয়নুল আবেদীন বলেন, কোনো মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট জামিন দিলেও সরকারের পক্ষ থেকে বারবার জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের জন্য কাজ না করে সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এফএন/এমআর