সুন্দরবনে নিবিঘ্নে মধু আহরণে কঠোর নিরাপত্তা

প্রথম পাতা » জাতীয় » সুন্দরবনে নিবিঘ্নে মধু আহরণে কঠোর নিরাপত্তা
বুধবার ● ৩ এপ্রিল ২০১৯


সুন্দরবনে নিবিঘ্নে মধু আহরণে কঠোর নিরাপত্তা

সাতক্ষীরা সাগরকন্যা অফিস॥

সুন্দরবনের মধু আহরনের মৌসুম শুরু হয়েছে। মৌয়ালরা মধু সংগ্রহের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্দরবনে প্রবশে করছে বাওয়ালীরা। চলতি মৌসুমে বাঘের আক্রমণের ঝুঁকির পাশাপাশি বনদস্যুদের হামলার ভয় মাথায় নিয়ে তাদের বনে যেতে হচ্ছে। তবে মধু আহরণ মৌসুমকে সামনে রেখে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগে নেওয়া কঠোর নিরাপত্তার বলয়। বাওয়ালীরা বন দস্যুদের ভয় নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করলেও আইনশৃংখলা বাহিনী ও বন বিভাগের সাড়াশি অভিযানে সুন্দরবন এখন বনদস্যু মুক্ত প্রায়। বনদস্যুদের ব্যাপারে বন বিভাগের দাবী মৌওয়ালরা কোন অভিযোগ না করায় এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।
এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা গেছে, সুন্দরবনের মধু সু-মিষ্টি, এ বনের মধু মহাঔষধ ও প্রাকৃতিক সম্পদ। মধু দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে গিয়ে বাঘ, সাপ, কুমিরের সাথে জীবন বাজি রেখে এবং ভয়ংকর বন দস্যুদের চাঁদা, মুক্তিপন মাথায় নিয়ে সুন্দরবনে মধু আহরণ করতে হচ্ছে। চলতি বছর বন বিভাগের কোন হয়রানী ছাড়াই পাশ পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পেরে বেশ খুশি বাওয়ালীরা। খুলনা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) মোঃ আবু সালেহ জানান, মৌয়ালীরা কোন প্রকার হয়রানীর শিকার না হয় তার জন্য সকল স্টেশন ও টহল ফাঁড়ির কর্মকর্তা কর্মচারিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বন বিভঅগের কারর বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ১লা এপ্রিল থেকে মধু আহোরনের মৌসুম শুরু হয়েছে। ১৫ জুন পর্যন্ত মধু আহরণ চলবে। বন বিভাগের বিভিন্ন স্টেশন থেকে মৌয়ালরা পাশ পারমিট নিয়ে বনে যাচ্ছে। খুলনা, সাতক্ষীরা সহ উপকূলীয় এলাকার ১৯-২০টি উপজেলার মৌয়ালরা বিভিন্ন মহাজনের অধিনে মধু সংগ্রহ করতে বনে প্রবেশ করে। সুন্দরবন বন বিভাগে পশ্চিম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পশ্চিম বন বিভাগ থেকে মধু ১৭৫০ কুইন্টল ও ৪৪০ কুইন্টল মোম আহরণের লক্ষ্য মাত্রা রয়েছে। এর মধ্যে খুলনা রেঞ্জে মধু ৭০০ কুন্টল ও ১৭৫ কুইন্টল মোম এবং সাতক্ষীরা রেঞ্জে থেকে ১০৫০ কুইন্টল এবং ২৬৫ কুইন্টল মোম। এ বছর বড় ধরনের কোন বিপর্যয় না হলে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি মধু আহরণের আশা করছে বন বিভাগ।
কাশিয়াবাদ স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ সুলতান মাহমুদ হাওলাদার বলেন, মধূ আহরণ মৌসুমে কোন বাওয়ালী কোন প্রকার হয়রানী না হয় তার জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক তদারকি করা হচ্ছে। নির্বিঘ্নে মধূ আহরণ করতে মৌয়ালীদেরকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কয়রা উপজেলার ৪নং কয়রা গ্রামের মৌয়ালী রফিকুল সানা জানায়, তারা মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বনে মধু আহরণের জন্য প্রবেশ করেছে। সরকারি কিংবা বে সরকারি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে বিনা সুদে লোন দিলে তাদের পক্ষে ভাল হতো। একাধিক মধূ আহরনকারি মৌয়ালদের দাবি মধূ আহরণ মৌসুমে সল্প সুদে তাদের লোন দিলে তারা মহজন প্রথা থেকে দুরে থাকতে পারতো। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের ডিএফও মোঃ বশিরুল-আল মামুন বলেন, ১ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মধু আহরণ চলবে। মৌয়ালদের নিরাপত্তার জন্য বন বিভাগের টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। সুন্দরবনে বনজীবি মৌয়ালরা মধু আহরণে বনের ভিতর নিবিঘেœ চলাচল করতে পারে তার জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৩:১৯:৫১ ● ৬৯৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ