ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
সুলতান মনসুরের পর এবার দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়নে নির্বাচিত গণফোরাম নেতা মোকাব্বির খান। গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন। গণফোরামের ২৬ বছরের ইতিহাসে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত একমাত্র সংসদ সদস্য তিনি।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবনে তার দপ্তরে তা মোকাব্বির খানকে শপথবাক্য পাঠ করান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংসদ সচিব জাফর আহমেদ খান। সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী ৩০০ প্রার্থীর মধ্যে মোকাব্বিরকে নিয়ে মোট ২৯৪ জন এ পর্যন্ত শপথ নিয়েছেন। বিএনপি থেকে নির্বাচিত ছয়জনই এখন শুধু বাকি। বিগত ৩০ ডিসেম্বর ওই নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাত্র ছয়টি আসনে জয় পায় বিএনপি। আর গণফোরামের দুটি মিলিয়ে ঐক্যফ্রন্ট পায় মোট আটটি আসন। নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ তুলে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলে তারা। নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবে না বলেও ঘোষণা দেওয়া হয় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে। কিন্তু ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করে জয়ী হওয়া গণফোরামের সুলতান মনসুর ৭ মার্চ শপথ নিয়ে এরইমধ্যে সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। ওই সময় মোকাব্বিরও শপথ নেবেন বলে জানানো হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি পিছু হটেন।
শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার অনুরোধ জানিয়ে সোমবার সংসদ সচিবালয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানোর পর মোকাব্বির দাবি করেন, দলীয় সিদ্ধান্তেই সংসদে যাচ্ছেন তিনি। গণফোরামের প্যাডে পাঠানো ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “আমি ও আমার দল গণফোরাম আগামি ২রা এপ্রিল বা ৩রা এপ্রিল শপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” কিন্তু গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, দলীয় ফোরামে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সুলতান মনসুর শপথ নেওয়ার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছিল গণফোরাম। আর বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, “আমাগো লগে থাইকা, আমাদের এখান থেকে আমরা পাখি ছাইড়া দিলাম, সংসদে চইলা গেল। আরও কিছু অপেক্ষা (সংসদে যোগদান) করছে কি না, আরো কিছু যাবে কি না-তাও জানি না।” তিনি এই সংশয় প্রকাশের দুই সপ্তাহ না যেতেই মোকাব্বির খান এমপি হিসেবে শপথ নিলেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন পেয়েছিলেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। প্রতীক বরাদ্দের দিন তাকে সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাজ্য চলে যান গণফোরামের উদীয়মান সূর্য নিয়ে ভোটে দাঁড়ানো মোকাব্বির। নির্বাচনের সপ্তাহ খানেক আগে লুনার প্রার্থিতা বাতিল করা হলে ঐক্যফ্রন্ট মোকাব্বিরকে সমর্থন দেয়। ইলিয়াছ আলীর পরিবারের সদস্যরাও মোকাব্বিরের পক্ষে প্রচারে অংশ নেন।
শেষ পর্যন্ত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুহিবুর রহমানকে ৩৯ হাজার ভোটে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন গণফোরাম নেতা মোকাব্বির খান।
এফএন/এমআর