নষ্ট ডেমু ট্রেনে কমিউটার সার্ভিসে জটিলতা সৃষ্টি
প্রথম পাতা »
জাতীয় »
নষ্ট ডেমু ট্রেনে কমিউটার সার্ভিসে জটিলতা সৃষ্টি
ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
চীন থেকে আমদানি করা ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট (ডেমু) ট্রেনগুলো নষ্ট হলেও মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই। ডেমু নষ্ট থাকার কারণে বন্ধ রয়েছে সিলেট-আখাউড়া, জয়পুরহাট-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-কুমিল্লা রুটের কমিউটার সার্ভিসগুলো। আগে বিভিন্ন জনপ্রিয় রুটে দুই সেট ডেমু একসঙ্গে সেবা দিলেও বর্তমানে ৮টি সেট নষ্ট থাকায় প্রতিটি রুটেই একটি মাত্র সেট দিয়ে কমিউটার সার্ভিস চালানো হচ্ছে। তারপরও প্রতি মাসেই দীর্ঘসময়ের জন্য ডেমুগুলো নষ্ট থাকায় রেলের স্বল্প দূরত্বের ট্রেন সার্ভিস কমিউটার ট্রেনসেবা বিঘিœত হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ডেমু ট্রেন মেরামতে বিগত ২০১৬ সালে ৩০৮ কোটি টাকার একটি ওয়ার্কশপ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু সমালোচনার মুখে সেটি থেমে যায়। ফলে রুটিন মেরামত হলেও ডেমু ট্রেনগুলো বড় ধরনের ওভারহোলিং ছাড়াই ধীরে ধীরে চলাচল অনুপযোগী হচ্ছে। ফলে ট্রেনগুলো দিয়ে পরিচালিত কমিউটার সার্ভিসও প্রায়ই বন্ধ থাকছে। বর্তমানে ২০ সেট ডেমু ট্রেনের (প্রতি সেটে দুই মুখে দুটি ইঞ্জিনসহ ৩টি কোচ) ১২টি চলমান রয়েছে। বাকি ৮টি মেরামতের জন্য পড়ে আছে। যদিও তার অর্ধেকেরই বেশি যন্ত্রাংশ আমদানি ছাড়া মেরামতের অনুপযোগী বলে রেল ওয়ার্কশপ কর্মকর্তারা জানিয়েছে। কারণ ডেমু ট্রেনের ইঞ্জিন কোচের নিচের দিকে হওয়ায় বিশেষায়িত কারখানা ছাড়া ওভারহোলিংয়ের সুযোগ নেই। ফলে আমদানির ৫ বছর অতিক্রান্ত হলেও ওসব কোচের ওভারহোলিং করা যায়নি।
সূত্র জানায়, ডেমু ট্রেন নষ্ট থাকায় সম্প্রতি কমিউটার ট্রেন সার্ভিসে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তার (ডিটিও) দপ্তর সম্প্রতি ডেমু ট্রেনগুলোকে নিয়মিত মেরামত কার্যক্রমে নিয়ে যেতে চিঠি দেয়। বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলীকে দেয়া ওই চিঠিতে বলা হয়, ইঞ্জিন ক্যাবসহ একাধিক যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় রুটে একাধিক কমিউটার সার্ভিস বন্ধ হয়ে আছে। চিঠিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে নষ্ট ডেমু ট্রেন মেরামত উপযোগী করতে সহযোগিতা চাওয়া হয়।
সূত্র আরো জানায়, চলতি বছরের ১ মার্চ নোয়াখালী-লাকসাম-কুমিল্লা রুটের ডেমু ট্রেনটি মেরামতের জন্য পাহাড়তলীতে নেয়া হলেও এখনো মেরামত কাজ শেষ হয়নি। বাধ্য হয়ে ওই রুটের কমিউটার সার্ভিসটি বন্ধ রয়েছে। ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর ১০০৩৯ ইঞ্জিন ক্যাব ও ১১ জুলাই থেকে ১০০১৭ ইঞ্জিন ক্যাব নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ১০০৩৭ ইঞ্জিন ক্যাবটি মেরামত করে কিছুদিন চালানো হলেও ফের নষ্ট হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় ওভারহোলিংয়ের মাধ্যমে ডেমু ট্রেনগুলো মেরামতের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে রেলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ ফারুক আহমেদ জানান, রেলের বর্তমান কারখানায় যতোটুকু সম্ভব ডেমুগুলো মেরামত করা হচ্ছে। তারপরও বিশেষায়িত মেরামত কার্যক্রমের জন্য একটি কারখানা স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই হচ্ছে। আশা করা যায় কারখানা স্থাপন হলে ডেমু ট্রেনগুলো নির্বিঘ্নে যাত্রীসেবা দিতে পারবে।
এফএন/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫২:১৮ ●
৫২৬ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)