শেষ হলো চতুর্থ দফার ভোট

প্রথম পাতা » জাতীয় » শেষ হলো চতুর্থ দফার ভোট
রবিবার ● ৩১ মার্চ ২০১৯


---

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চতুর্থ দফার ভোট গ্রহণের দিনেও ভোটারের খরা গেল না। রোববার বেলা চারটায় শেষ হয়েছে ভোট গ্রহণ। দিনভর বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশ কম। সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া রবিবারের ভোটে কেন্দ্র দখল, জাল ভোট, গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গোলযোগের কারণে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় জাল ভোট দিতে সহযোগিতাসহ নানা অনিয়মে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ একাধিক কর্মকর্তাকে আটক এবং কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চতুর্থ ধাপে ১০৭টি উপজেলা পরিষদে রোববার ভোট নেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের(ইসি) তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এই ধাপেও ৩৯টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোটের প্রয়োজন হয়নি। আর চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান-এই তিন পদের কোনোটিতেই প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ১৫টি উপজেলা পরিষদে ভোটেরই দরকার হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে রবিবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশ কম। বাগেরহাটের ৯টি উপজেলায় হচ্ছে ভোট। রোববার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও তেমন ভোটার উপস্থিতি ছিল না কোনো কেন্দ্রে। সদর উপজেলার নির্বাচনে বেলা ১১টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরলেও কোথাও চোখে পড়েনি ভোটারের সারি। সকাল থেকে দু-একজন করে আসছেন ভোট দিতে। ইভিএম-এ ভোট দিয়ে খুশি হলেও ভোট নিয়ে তেমন আগ্রহ ছিল না তাদের। কেবল নতুন পদ্ধতির কারণে অনেকেই এসেছিলেন ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া দেখতে। কেন্দ্রে ভোটারের এই আকালের মধ্যেও ঘটে সংঘাত এবং নানা অনিয়ম। অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতের কথা জানানো হয়। রবিবার সকাল থেকে তিতাস উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে গোলাগুলি, দখল, জাল ভোট দেওয়ার ঘটনা চলে। তিতাসে বড় সংঘাতের ঘটনা ঘটে জিয়ারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এখানে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনার পর ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় এই ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহিনুর ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের প্রার্থী পারভেজ হোসেন সরকারের সমর্থকদের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরে আরও চার কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। বেলা তিনটার দিকে পুরো উপজেলার ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে টাঙ্গাইলের বাসাইলের দক্ষিণ পাড়া কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। জেলার মির্জাপুরে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে দুজনকে আটক করে পুলিশ। ধামরাইয়ের কান্দাপটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবুল বাশারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি গত ২৪ মার্চ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বলে জানায় পুলিশ। এ তথ্য তিনি গোপন রেখেছিলেন। এই অভিযোগে বাশারকে গ্রেপ্তার করেন নির্বাহী হাকিম প্রণব কুমার ঘোষ। কোনো পদেই প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় গতকাল ১৫টি উপজেলা পরিষদে ভোট হয়নি। সেগুলো হলো ভোলার ভোলা সদর, মনপুরা ও চরফ্যাশন; যশোরের শার্শা, ময়মনসিংহের গফরগাঁও, ঢাকার সাভার ও কেরানীগঞ্জ; কুমিল্লার লাকসাম, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, দেবীদ্বার ও চৌদ্দগ্রাম; নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও ফেনীর পরশুরাম। গতকাল পটুয়াখালী সদর, কক্সবাজার সদর, বাগেরহাট সদর, ময়মনসিংহ সদর, মুন্সিগঞ্জ সদর ও ফেনী সদরে ভোট হয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল চতুর্থ ধাপের ভোটে চেয়ারম্যান পদে মোট প্রার্থী ৩৫১ জন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৫৩৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৪০৬ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ৯ হাজার ৭৪০টি। ভোটকক্ষের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৬৯৬। মোট ভোটার ২ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ৭০৪ জন।
বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলো এবারের উপজেলা নির্বাচন বর্জন করায় ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাও সেভাবে হচ্ছে না। প্রথম ধাপে ১৪ জন, দ্বিতীয় ধাপে ২৩ জন, তৃতীয় ধাপে ৩১ জন এবং চতুর্থ ধাপে ৩৯ জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। মূলত বেশির ভাগ উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী। প্রথম তিন ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ৪০ শতাংশের কিছু বেশি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪১:৫১ ● ৫০১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ