বানারীপাড়া (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বানারীপাড়ার উত্তর বাইশারী গ্রামের অসোহায় শতবর্ষী বৃদ্ধ পিতা আব্দুল কাদের হাওলাদার’র খোজ-খবর রাখছেন না তার দুই ছেলে মুধিদোকানী সুলতান হোসেন হাওলাদার (৬০) ও ব্যাবসায়ী জামাল হোসেন হাওলাদার (৫০)। তারা দুই ভাই মিলে বৃদ্ধ পিতার খোজ-খবর না রাখলেও সম্প্রতি তার সম্পত্তি জবর দখলে নেয়ার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় পার্শ্ববর্তী এলাকার নাতি আফজাল হোসেন বাদী হয়ে সম্প্রতি তার দুই ছেলে মুধিদোকানী সুলতান হোসেন হাওলাদার ও ব্যাবসায়ী জামাল হোসেন হাওলাদার’র বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশের এ.এস.আই জাহিদ হোসেন এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করতে গিয়ে বৃদ্ধ আব্দুল কাদের হাওলাদারের কাছ থেকে তার অসোহায়ত্বের কথা জানতে পেরে নিজের অনুকুলে সরকারী ভাবে বরাদ্ধকৃত এক মাসের চাল, ডাল, তৈল, চিনি ও নগদ এক হাজার টাকা অনুদান দিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে জানা গেছে, বুধবার থানা পুলিশের এ.এস.আই জাহিদ হোসেন সরেজমিনে এ বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে বৃদ্ধ আব্দুল কাদেরের কাছ থেকে তার অসোহায়ত্বের কথা জানতে পেরে নিজের অনুকুলে সরকারী ভাবে বরাদ্ধকৃত এক মাসের চাল, ডাল, তৈল, চিনি ও নগদ এক হাজার টাকা অনুদান দিয়ে আসেন। অসোহায় বৃদ্ধ পিতার এ অবস্থা দেখে ছেলেদের মন না গললেও আবেগ ধরে রাখতে পারেননি থানা পুলিশের এ.এস.আই জাহিদ। তিনি বুধবার সকালে উপজেলার উত্তর বাইশারী গ্রামে দুই ছেলের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ পিতার সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারেন, দীর্ঘ দিন ধরে বৃদ্ধ আব্দুল কাদের হাওলাদার (১২০)’র দুই ছেলে মুধিদোকানী সুলতান হোসেন হাওলাদার ও ব্যাবসায়ী জামাল হোসেন হাওলাদার তার পিতার কোন খোজ-খবরই রাখেন না। তারা দুই ভাই মিলে বৃদ্ধ পিতা আব্দুল কাদের হাওলাদার’র সকল সম্পত্তি জবর দখলে নেয়ার চেষ্টা করছেন।
বর্তমানে অসহায় বৃদ্ধ পিতা আব্দুল কাদের হাওলাদার চলা-ফেরা করতে পরছেন না। তিনি শারীরিক ভাবে চলা-ফেরা করতে অক্ষম হলেও তার দুই ছেলে আর্থিক ভাবে স্বচল রয়েছেন। দীর্ঘ দিন ধরে তার ছেলেরা তাকে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত কিংবা চিকিৎসা সেবা দেন না। বর্তমানে তিনি একটি কুরে ঘরের সামনের মেঝেতে সুয়ে থাকেন। এ অবস্থায় তাকে দেখা-শুনা করছেন তার নাতি আফজাল হোসেন ও তার পরীবারের সদস্যরা।
এদিকে বৃদ্ধ পিতার সম্পত্তি জবর দখলে রাখা দুই ছেলের বিরুদ্ধে সম্প্রতি তার নাতি আফজাল হোসেন বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানার অফিসার ইনচার্জ মো.খলিলুর রহমান এ অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য এ.এস.আই জাহিদ হোসেনকে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী এ.এস.আই জাহিদ হোসেন ওই দিন সকালে সরেজমিনে তদন্ত করেন। এ সময় তিনি অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ পিতা আব্দুল কাদের হাওলাদারকে ভাত-কাপড় ও চিকিৎসা সেবা না দেয়ার সত্যতা পান। এ সময় তিনি ওই বৃদ্ধর অসোহায়ত্বের কথা জানতে পেরে বাসায় ফিরে নিজের অনুকুলে সরকারী ভাবে বরাদ্ধকৃত এক মাসের চাল, ডাল, চিনি, ছোয়াবিন তৈল ও নগদ এক হাজার টাকা নিয়ে আব্দুল কাদের হওলাদাকে দিয়ে আসেন। এ সময় তিনি বৃদ্ধ আব্দুল কাদের হাওলাদারকে বলে আসেন, আমি যতদিন এ থানায় থাকবো এভাবেই আপনাকে প্রতি মাসের রেশন দিয়ে যাব। এসব পেয়ে বৃদ্ধ আব্দুল খালেক হাওলাদার তার মাথায় হাত ভূলিয়ে মহান সৃস্টিকর্তার কাছে দোয়া করেন। বৃহস্পতিবার এ বিষয়টি স্থানীয় ভাবে জানা-জানি হলে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে ওসি মো.খলিলুর রহমান জানান, পুলিশ সব সময়ই অসোহায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বৃদ্ধ আব্দুল কাদের হাওলাদারের পাশে থেকেই সহযোগিতা করছি। এছাড়াও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রহন করা হবে বলেও তিনি জানান।