ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
খালেদা জিয়াকে শিগগিরই কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেওয়া হবে -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশনেত্রীর জীবন নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলায় জনগণ ক্ষোভে অগ্নিবর্ণ হয়ে উঠেছে। সীমাহীন অন্যায়ের জবাব জনগণ একদিন দেবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। রিজভী বলেন, কেরানীগঞ্জ কারাগারের নির্মাণকাজ এখনও শেষ হয়নি। সেখানে গ্যাস-পানির এখনও তেমন কোনও সুবন্দোবস্ত নেই। নির্মাণাধীন একটি কারাগারে খালেদা জিয়াকে স্থানান্তরের সরকারি চিন্তা-ভাবনা মনুষ্যত্বহীন কাজ। রিজভীর বলেন, ভিন্ন মত বা বিরোধী দলের প্রতি সহিষ্ণুতা, মানবিকতা, সততা ও সহানুভুতি নেই আওয়ামী লীগের। গণতন্ত্র হরণ ও বিরোধী দল নিধন যাদের সরকারি কর্মসূচি, তাদের কাছ থেকে মানবতা আশা করা যায় না। সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার প্রতি জুলুমের ঊর্ধ্বগতি বন্ধ করুন। তাকে নিয়ে রাজনৈতিক ধূর্তামি বন্ধ করুন। এই মুহূর্তে তাকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসা প্রাপ্তির বন্ধ করার পথকে খুলে দিন। তার জীবন নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলায় জনগণ ক্ষোভে অগ্নিবর্ণ হয়ে উঠেছে। এই সীমাহীন অন্যায়ের জবাব জনগণ একদিন দেবে। সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অসুস্থতা এখন বিপজ্জনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে তিনি একটি অস্বাস্থ্যকর ও পরিত্যক্ত কারাগারের মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। ৭৪ বছর বয়সী এই নেত্রীকে বিনা চিকিৎসায় কারাগারে বন্দি করে রাখার উদ্দেশ্যই হচ্ছে এক অনন্ত প্রতিহিংসার জ¦ালা মেটানো। তাকে সরকার সরাসরি গলা টিপে হত্যা না করে এভাবে বিনা চিকিৎসায় অন্ধকার কারাগারে আটকে রেখে তিলে তিলে হত্যা করার চেষ্টা করছে। বাকশাল মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছিলো- প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, তারই কথায় গোটা জাঁতি আঁতকে উঠেছে। এই বক্তব্য শুধু গণতন্ত্র নয়, নাগরিক স্বাধীনতাকে মৃত্যুর দক্ষিণ বাহু দিয়ে পেঁচিয়ে ফেলার আগাম আভাস। বাকশাল হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতার মৃত্যু পরোয়ানা। বাকশাল মানেই হচ্ছে আওয়ামী লীগ ছাড়া এদেশে আর কোনো দল থাকবে না। তাদের পোষ্য গণমাধ্যম ছাড়া আর কোনো গণমাধ্যম থাকবে না। তাদের বিরদ্ধে কেউ টু শব্দটি উচ্চারণ করতে পারবে না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকবে না। এই কারণেই শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিপক্ষ এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির মূল কাণ্ডারী নির্দোষ খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বাকশালী আলামত এখন সর্বক্ষেত্রে বিদ্যমান বলেও দাবি করে রিজভী বলেন, তার সামান্য সমালোচনা করায় কৃতী ফুটবলার, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বরেণ্য সাংবাদিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ শতাধিক আলোকিত ব্যক্তি আইসিটি আইনে মামলা খেয়ে এখন কারাগারে কিংবা কেউ কেউ জামিনে বেরিয়ে মামলার খড়গ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।