ঢাকা সাগরকন্যা অফিস ॥
খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জের কারাগারে নেওয়ার পরিকল্পনার বিরোধিতাকারী বিএনপি নেতাদের পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আসলে তারা বেগম জিয়াকে কোথায় রাখতে চান? আপনারা বলুন, বেগম জিয়াকে কোথায় রাখব? ওনাকে কি পাঁচ তারকা হোটেলে রাখতে হবে? বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সংবাদ সম্মেলনের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন হাছান মাহমুদ।
দুর্নীতির দুটি মামলায় দ- নিয়ে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পরিত্যক্ত কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে এক বছরের বেশি সময় ধরে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গত বুধবার জানান, পুরনো কারাগারটি জাদুঘরে রূপান্তরের কাজ শিগগিরই শুরু করা হবে বলে খালেদা জিয়াকে সেখান থেকে কেরানীগঞ্জের কারাগারে সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন তারা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে রিজভী বলেন, যখন গোটা জাতি তার মুক্তির জন্য, তার সুচিকিৎসার জন্যে সোচ্চার, দেখুন তখন জনগণের কাছে জবাবদিহিহীন সরকার কী কথা বলছেন; কত বড় অমানবিক হতে পারেন তারা।
তার বক্তব্যের পাল্টায় হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির রাজনীতি এখন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মধ্যে আটকে আছে। তারা একেক সময় একেক কথা বলেন। বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়াকে যখন পুরাতন কারাগারে নেওয়া হয়ে, তখন তারা বলেছিল, একটি পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে রাখা হচ্ছে। তারা আজকে আধুনিক সকল সুবিধা সম্বলিত কেরানীগঞ্জের কারাগারকে নির্মাণাধীন বলছেন। অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সরকার নাকি অমানবিক আচরণ করছে। কারাগারে খালেদা জিয়া যেসব সুবিধা পেয়েছেন, ভারতীয় উপমহাদেশে কোনো রাজবন্দিও এমন সুবিধা পায়নি বলে দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দুটি কেবিন প্রস্তুত রাখার কথাও বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে দুটি কেবিন খালেদা জিয়ার জন্য বুক করে রাখা হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ সেখানে নেওয়ার সকল প্রস্তুতি নিলেও খালেদা জিয়ার অনিচ্ছার কারণে আনা হয়নি। এখন প্রশ্ন জাগে, এই হাসপাতালের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নাম জড়িত থাকায়ই বেগম জিয়া আসতে চান না? বিএনপি শুরু থেকেই তাদের দলীয় চেয়ারপারসনকে বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর দাবি জানিয়ে আসছে। বিএসএমএমইউতে নেওয়ায় আপত্তি জানাচ্ছেন তারা।
হাছান মাহমুদ বিএসএমএমইউর চিকিৎসা সুবিধা তুলে ধরে বলেন, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকের জীবন মরণ সন্ধিক্ষণেও বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে সর্বোচ্চ চিকিৎসা পেয়েছে, সেটা ভারতীয় চিকৎসক, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরাও বলেছে। তাহলে বেগম জিয়া এখানে আসতে চান না কেন? বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, বন্দুকের নলের ডগায় যেই দলের জন্ম, সেই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, তার মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।
সংবাদ সম্মেলনে হাছান মাহমুদের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক সামসুন্নাহার চাপা, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন, মারুফা আক্তার পপি, রিয়াজুল কবির কাউসার, রেমন্ড আরেং।
এফএন/কেএস