সাগরকন্যা স্পোর্টস ডেস্ক॥
চিরাগ জানির ব্যাটে সহজ জয়ের পথে ছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। তবে ছক্কায় সেঞ্চুরি ছোঁয়ার আশায় ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি, পাল্টে যায় ম্যাচের চিত্র। মুকিদুল ইসলামের বোলিং তোপে ঘুরে দাঁড়ায় বিকেএসপি। শেষ ওভারে দারুণ বোলিং করে রোমাঞ্চকর ম্যাচে দলকে নাটকীয় জয় এনে দেন সুমন খান।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের পঞ্চম রাউন্ডে ২ রানে জিতেছে বিকেএসপি। ২৬৭ রান তাড়ায় ৯ উইকেটে ২৬৫ রান করে ব্রাদার্স।
পাঁচ উইকেট হাতে নিয়েও শেষ ২ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি ব্রাদার্স। ৪৯তম ওভারে মাত্র চার রান দিয়ে দুটি উইকেট তুলে নেন গতির ঝড় তোলা মুকিদুল। সুমনের করা পরের ওভারে প্রয়োজন ছিল ১২। সেই ওভারে ৯ রানের বেশি নিতে পারেননি ব্রাদার্স।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার শুরুটা ভালো হয়নি বিকেএসপির। এবারের আসরে মিরপুরে প্রথম দল হিসেবে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২৫ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়ে তারা।
আমিনুল ইসলামের সঙ্গে ৬৬ রানের জুটিতে প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়েন শামিম হোসেন। দলকে এগিয়ে নেওয়া এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ করে থামান নাঈম ইসলাম জুনিয়র। ৯৬ বলে খেলা শামিমের ৭১ রানের ইনিংস গড়া নয়টি চার ও একটি ছক্কায়।
কিপার ব্যাটসম্যান আকবর আলীর সঙ্গে পারভেজ হোসেনের ৯০ রানের জুটিতে এগিয়ে যায় বিকেএসপি। ৬০ বলে ৫৬ রান করা আকবরকে ফিরিয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ শরীফ।
এরপর দলকে আড়াইশ রানে নিয়ে যান পারভেজ। ৫৪ বলে পাঁচ ছক্কা ও তিন চারে তিনি খেলেন ৬৯ রানের ঝড়ো এক ইনিংস।
রান তাড়ায় দ্রুত মিজানুর রহমান ও ফজলে মাহমুদকে হারায় ব্রাদার্স। দুই ব্যাটসম্যানই ফিরেন ডানহাতি পেসার মুকিদুলকে পুল করার চেষ্টায়।
জানির সঙ্গে ৯৩ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান জুনায়েদ সিদ্দিক। তিন চারে ৫২ রান করা বাঁহাতি এই ওপেনারকে ফেরান শামিম।
ইয়াসির আলী চৌধুরীর সঙ্গে ৭৪ ও শরিফউল্লাহর সঙ্গে ৫৬ রানের দুটি জুটিতে দলকে কক্ষপথে রাখেন জানি। অফ স্পিনার শামিমকে ছক্কায় উড়িয়ে তিন অঙ্ক ছুঁতে চেয়েছিলেন ভারতীয় এই ব্যাটসম্যান। টাইমিং করতে না পেরে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ১২০ বল স্থায়ী ৯৬ রানের লড়াকু ইনিংস।
জানির বিদায়ের পরও ম্যাচ ঝুঁকে ছিল ব্রাদার্সের দিকে। গতিময় শর্ট বল আর স্লোয়ারের মিশেলে ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করে মুকিদুল ফিরিয়ে দেন জাহিদুজ্জামান ও শরীফকে।
শেষ ওভারের প্রথম বলটি ‘নো’ করেন সুমন। ফ্রি হিট কাজে লাগাতে পারেননি ইবাদত হোসেন। তৃতীয় বলে দুই রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হয়ে ফিরে যান তিনি।
চতুর্থ বলে দুই রান নেন শরিফউল্লাহ। ক্যাচ দিয়েও বাউন্ডারি পেয়ে যান এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ৩ রান। কিন্তু সুমনের শর্ট বলে ব্যাটই ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নেয় বিকেএসপি। ৩৪ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থেকে যান শরিফউল্লাহ।
৬২ রানে চার উইকেট নেন তরুণ পেসার মুকিদুল। শামিম ২ উইকেট নেন ৪৩ রানে। অলরাউন্ড নৈপুণ্যের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন এই তরুণ।
পাঁচ ম্যাচে দ্বিতীয় জয় পেল বিকেএসপি। সমান ম্যাচে তৃতীয় ম্যাচে হারল ব্রাদার্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বিকেএসপি: ৫০ ওভারে ২৬৭/৯ (নওরোজ ১, মাহমুদুল ১০, ফাহাদ ৪, আমিনুল ২৩, শামিম ৭১, আকবর ৫৬, পারভেজ ৬৯, ইকবাল ৯, সুমন ১২*, মুকিদুল ০, মুরাদ ০*; ইবাদত ২/৫৭, শরীফ ৩/৬৫, শরিফউল্লাহ ১/২৯, জানি ১/৫১, নাঈম জুনিয়র ১/৪৫, শাখাওয়াত ০/১৭)
ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৫০ ওভারে ২৬৫/৯ (মিজানুর ২৩, জুনায়েদ ৫২, মাহমুদ ০, জানি ৯৬, ইয়াসির ৩৮, শরিফউল্লাহ ৪২*, জাহিদ ৩, শরীফ ০, ইবাদত ১, শাখাওয়াত ০; মুকিদুল ৪/৬২, শামিম ২/৪৩, সুমন ০/৫৬, মাহমুদুল ০/১৭, মুরাদ ০/৪১, ইকবাল ১/৪৬)
ফল: বিকেএসপি ২ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: শামিম হোসেন