ড্রাম চিমনি, পোড়ানো হচ্ছে কাঠ কলাপাড়ায় নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে ইটভাঁটি নির্মাণ

প্রথম পাতা » সর্বশেষ » ড্রাম চিমনি, পোড়ানো হচ্ছে কাঠ কলাপাড়ায় নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে ইটভাঁটি নির্মাণ
সোমবার ● ১৮ মার্চ ২০১৯


---

মেজবাহউদ্দিন মাননু, কলাপাড়া থেকে॥
ড্রাম চিমনির ব্যবহার হচ্ছে। পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। আবাসিক এলাকায় এভাবে ফ্রি-স্টাইলে করা হয়েছে ইটভাঁটি। নীলগঞ্জের সুলতানগঞ্জ গ্রামে এমন একটি ইটভাঁটি করা হয়েছে। আশপাশেও রয়েছে আরও দুইটি ইটভাঁটি। ওই দুইটিতে কাঠ পোড়ানো হলেও চিমনি করা হয়েছে ঝিকঝাক। শুধুমাত্র নীলগঞ্জ ইউনিয়নে আন্দারমানিক ও সোনাতলা নদীর তীরে গড়ে তোলা হয়েছে দশের অধিক ইটভাঁটি। যেন কোন নিয়মের বালাই নেই। উপকূলীয় কলাপাড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে অন্তত ৪৮টি ইটভাঁটি রয়েছে। এদের অধিকাংশের নেই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। অধিকাংশ ইটভাঁটির মালিকরা কমবেশি খাস জমি দখল করেছে। টপসয়েল ব্যবহার করছে দেদারছে। নদী তীরের মাটি কেটে ইট পোড়ানো হচ্ছে। কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই জনবহুল, কৃষি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাঁটি। কয়লা নামে মাত্র মজুদ রেখে কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট। বহু ইটভাঁটিতে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ কেটে পোড়া হচ্ছে। বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দুই কিমি এলাকায় কোন ইটভাঁটি করার নিয়ম নেই। তা মানা হচ্ছে না। জেলা প্রশাসনও এ ব্যাপারে নিশ্চুপ রয়েছে। কয়েকটি ইটভাঁটির মালিক দখল করেছেন নদী তীরসহ খাস জমি। এমনকি ইলিশের অভয়াশ্রম আন্দারমানিক নদীর তীরও রক্ষা পায়নি দখল থেকে। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের দেয়া তথ্যানুসারে কলাপাড়ায় বর্তমানে ৪৮টি ইটভাঁটি রয়েছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন) আইনে বলা হয়েছে ইট তৈরিতে কাচামাল হিসেবে কৃষি জমি পাহাড় টিলার মাটি ব্যবহারের সুযোগ নেই। অনুমতি ব্যতিরেকে পুকুর, খাল-বিল, খাঁড়ি, নদ-নদী, হাওর-বাওর, চরাঞ্চল, পতিত জমি থেকে মাটি কাটার সুযোগ নেই। জ¦ালানি কাঠ ব্যবহার যাবে না। এমনকি ইট ব্যবহারের কাঁচামাল কিংবা ইট বিক্রির জন্য উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্মিত উপজেলা, ইউনিয়ন কিংবা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে ভারি যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। আবাসিক, বাণিজ্যিক, সংরক্ষিত এলাকা। সিটি কর্পোরেশন, পৌর এলাকা উপজেলা সদর। ব্যক্তি মালিকানাধীন কিংবা সরকারি বন, অভয়ারন্য, বাগান বা জলাভূমি, কৃষিজমি, প্রতিবেশ সঙ্কটাপন্ন এলাকায় ইটভাঁটি করা যাবেনা। এসব আইন অমান্য করে ইটভাঁটি স্থাপন করলে জরিমানা জেল দেয়ার বিধান রয়েছে। জেলা প্রশাসক এসব পর্যালোচনা করে লাইসেন্স প্রদান করবেন। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। কিন্তু কলাপাড়ায় এসব নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করেই দেদার ইটভাঁটি নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে পরিবেশ প্রতিবেশ হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে। এব্যাপারে এখনই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৪:২৮ ● ৫২২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ