আমতলীতে বিধবাকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার নেই
প্রথম পাতা »
বরগুনা »
আমতলীতে বিধবাকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার নেই
আমতলী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বিধবা মনোয়ারা বেগমকে (৬৫) নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গত এক মাসেও কাউকে গ্রেফতার ও মামলার কুল কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। বাদী এলিজা বেগমের অভিযোগ মামলা তুলে নিতে আসামী সামসুদ্দিন আহম্মেদ ও তার দুই ছেলে লিমন ও সাখাওয়াত হোসেন জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে। আসামীদের ভয়ে সে ও তার পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানাগেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের বৃদ্ধা বিধবা মনোয়ারা বেগম ও তার ছোট ভাই রাজ্জাক খানের সাথে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তাদের সৎ মামা সাবেক ইউপি সদস্য সামসুদ্দিন আহম্মেদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে তাদের মাঝে চলছে একাধিক মামলা। ওই বিরোধীয় জমিতে বৃদ্ধা বিধবা মনোয়ারা বেগম (৬৫) একটি খরের ঘরে তুলে একা বসবাস করতেন। ওই ঘর থেকে বৃদ্ধাকে উচ্ছেদের জন্য একাধিক বার চেষ্টা করেছেন আসামীরা। উচ্ছেদ করতে না পেরে গত ৯ ফেব্রুয়ারী রাতে ওই ঘরে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয় এমন অভিযোগ মামলার বাদী এলিজা বেগমের। আগুনের লেলিহান শিখায় মনোয়ারা বেগম পুড়ে দগ্ধ হয়ে মারা এবং ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই দিন আমতলী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে মামলা করা হয়। গত এক মাস পেড়িয়ে গেলেও এ মামলার কোন অগ্রগতি করতে পারেনি পুলিশ। উপায় না পেয়ে গত ৬ মার্চ নিহত বিধবা মনোয়ারা বেগমের কন্যা এলিজা বেগম বাদী হয়ে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গুলিশাখালী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সামসুদ্দিন আহম্মেদ তার দুই ছেলে লিমন ও শাখাওয়াতকে আসামী করে ৫ জনের নামে পুড়িয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে জিআর ২৬/১৯ মামলার সাথে একীভুত করে আমতলী থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
নিহত মনোয়ারা বেগমের কন্যা মামলার বাদী এলিজা বেগম বলেন, সামসুদ্দিন আহম্মেদ ও তার লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার মাকে ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। যেকোন সময় আমাকেও হত্যা করতে পারে। তিনি আরো বলেন, আমি আদালতে মামলা দায়েরের পরে আসামী সামসুদ্দিন আহম্মেদ তার দুই ছেলে লিমন ও সাখাওয়াত মামলা তুলে নিতে আমাকে জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে। আসামীদের ভয়ে রাস্তা ঘাটে চলতে পারছি না। আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।
নিহত মনোয়ারা বেগমের ছোট ভাই আবদুল রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আমার সৎ মামা সাবেক ইউপি সদস্য সামসুদ্দিন আহম্মেদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। ওই মামলায় আমার বোন ছিল দুই নম্বর আসামী। আমার বোনকে হত্যা করেছে এখন আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। প্রায় রাতেই আমাকে ও আমার ভাগ্নি মামলার বাদী এলিজাকে হত্যার জন্য আমার বাড়ীতে সামসুদ্দিন আহম্মেদ ও তার দুই ছেলে লোকজন নিয়ে আসে। আমি ভয়ে দিনাতিপাত করছি। যে কোন সময় আমাদের হত্যা করতে পারে।
মামলার আসামী সামসুদ্দিন আহম্মেদ বাদীকে জীবন নাশের হুমকি দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার জমিতে ওরা বসবাস করে আমি কেন ওদের হুমকি দিতে যাব?
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফারুক জানান, এ মামলার কোন অগ্রগতি নেই। মামলার বাদীকে স্বাক্ষী নিয়ে আসতে বললেও সে আসছে না। তিনি আরো বলেন, মামলার বাদী নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য এলাকার মানুষকে মামলায় জড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আলাউদ্দিন মিলন বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৩৩:২৮ ●
৫৫৭ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)