
আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় নিষিদ্ধ সংগঠন তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠু, তার বৃদ্ধা মা নাসিমা বেগম, স্ত্রী সানজিদা ও ভাই এনামুল ইমনকে উপজেলা শ্রমিকদল সভাপতি শাহ আলম মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া ও তার সহযোগী মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন অভিযোগ করেছেন মিঠুর ভাই এমানুল ইমন। পুলিশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে মিঠুকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করেছে বলে দাবী তার। সন্ত্রাসীদের ভয়ে মিঠুর পরিবারের লোকজন চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যেতে পারছে না বলে আরো অভিযোগ ইমনের। ঘটনা ঘটেছে তালতলী উপজেলার নয়াপাড়া এলাকায় শনিবার দুপুরে।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর বাবা জয়নাল হাওলাদার শহরের নয়াপাড়া এলাকার সংগ্রাম অফিস সংলগ্ন স্থানে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন। শনিবার দুপুরে ওই বাড়ীতে উপজেলা শ্রমিক দল সভাপতি শাহ আলমের ছেলে রুবেল মিয়া ও তার সহযোগী মনিরুল ইসলাম গিয়ে মিঠুর কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। তাদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দিলে তারা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিবে হুমকি দেয়। কিন্তু মিঠু তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রুবেল ও মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী মিঠুকে মারধর করে। মিঠুকে রক্ষায় তার বৃদ্ধা মা নাসিমা বেগম,স্ত্রী সানজিদা আক্তার ও কলেজ পড়–য়া ভাই এনামুল ইমন এগিয়ে আসলে তাদের মারধর করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিঠুকে উদ্ধার এবং রুবেল ও মনিরুল ইসলামকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে পুলিশ মুচলেকা রেখে রুবেল ও মনিরুল ইসলামকে ছেড়ে দেয় এবং মিঠুকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে। এদিকে মিঠুর আহত বৃদ্ধা মা ও তার পরিবারের লোকজন সন্ত্রাসীদের ভয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা জন্য যেতে পারছে না বলে অভিযোগ মিঠুর ভাই এনামুল ইমনের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, উপজেলা শ্রমিকদল সভাপতি শাহ আলম মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া ও মনিরুল ইসলামসহ ১৫-২০ জন লোক এসে মিঠুর কাছে চাঁদা দাবী করেন। মিঠু চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা তাকে বেধরক মারধর করেছে। তাকে রক্ষায় তার মা, স্ত্রী ও ভাই এগিয়ে আসলে তাদেরকে মারধর করেছে। পরে পুলিশ এসে মিঠুকে উদ্ধার করে এবং রুবেল ও মনিরুল ইসলামকে থানায় নিয়ে যায়।
মিঠুর ভাই এনামুল ইমন বলেন, আমার বাবার পাকা ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। ওই কাজ করতে হলে রুবেল মিয়া ও মনিরুল ইসলামকে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে। নইলে ঘর তুলতে দিবে না। আমার ভাই তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে পিটিয়ে জখম করেছে। তিনি আরো বলেন, তাদের ভয়ে আমার বৃদ্ধা মা ও ভাবিতে হাসপাতালে চিকিৎসা জন্য নিয়ে যেতে পারছি না। আমার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঠুর মা নাসিমা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে রক্ষায় আমি গিয়ে রুবেল ও মনিরুল ইসলামের পা জড়িয়ে ধরেছি। কিন্তু তারা আমার ছেলেকে মারধর বন্ধ না করে উল্টো আমাকে,আমার ছেলের বউ ও আমার ছোট ছেলেকে মারধর করেছে।
এ বিষয়ে রুবেল মিয়া চাঁদা দাবীর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় জনতা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মিঠুকে ধরে পুলিশে দিয়েছে। এখানে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
তালতলী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঠুকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। ওই সময় রুবেল ও মনিরুল ইসলাম তার সাথে থানায় আসে। পরে মিঠুর একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে রুবেল ও মনিরুলকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মিঠুকে একটি মামলার গ্রেপ্তার করা হয়।
এমএইচকে/এমআর