
গৌরনদী (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরিশালের গৌরনদীতে খাল পুনঃখননে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বার্থী ও ডুমুরিয়া গ্রামের সর্ব্বস্তরের চাষিদের ব্যানারে পশ্চিম বার্থী ব্রিজ নামকস্থানে বার্থী-ভালুকশী সড়কে দুই শতাধিক কৃষক এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা খাল কাটার এস্কেভেটার (ভেকু) বন্ধ করে দেয়।
ইরি-বোরো ও পান চাষি আ. গনি সরদারের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান মিন্টু, এস.এম মোশারফ হোসেন, ব্লক ম্যানেজার আব্দুল করিম হাওলাদার, পঞ্চানন দত্ত, ছালাম বেপারী, বোরো চাষি মোস্তফা হাওলাদার, কলম সরদার, শেখ সামাদ হুজুর, ছত্তার হাওলাদার, বার্থী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু বাশার সরদার প্রমূখ। বিক্ষুব্ধরা জানায়, বিএডিসি’র ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বার্থী গ্রামের আজিজ ফকিরের বাড়ির কাছ থেকে পশ্চিম বার্থী খিষ্টান বাড়ি পর্যন্ত ও ডুমুরিয়া গ্রামের উত্তর সীমানা থেকে বার্থী ৭৫ফুট ব্রিজ পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার খাল পুণঃখননের কাজ পান আজাদ এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে ও পুলিশের ভয়ভীতি দেখিয়ে খালের এক পাড়ের জমির মালিকদের গাছপালা কেটে ও পান বরজ ভেঙ্গে নিতে বাধ্য করেন। এরপর ঠিকাদাদের লোকজন এস্কেভেটার (ভেকু) চলাচলের জন্য খাল পাড়ের ফসলি জমি কেটে জমির ভেতর মাটি ফেলে রাখে। এরপর এস্কেভেটার দিয়ে খালের ভেতরের এক-তৃতীয়াংশ খেকে কিছু কাঁদামাটি কেটে ওই কাটা মাটির উপরে ফেলে প্রলেপ দিয়ে যাচ্ছে। এস্কেভেটার চলাচলের জন্য পশ্চিম বার্থী পুরানো জামে মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠে মুসল্লীদের যাতায়াতের প্রায় ১১’শ ফুট মাটির রাস্তার মাটি কেটে খালের ভেতর ফেলে আবার খাল থেকে ফেলা মাটির অধিকাংশ তুলে রাস্তায় ফেলা হয়। এতে রাস্তা আগের চেয়ে ৩/৪ ফুট নিচু হয়েছে ও রাস্তা ধসে পড়েছে। খালে যে মাটি ফেলা হয়েছিল তাও রাস্তায় তোলা হয়নি। ভেকু দিয়ে খালের ঢাল কাটার কারণে খালপাড়ের ফসলি জমি, বাড়ি, পান বরজ ও মাটির রাস্তা ধসে খালের ভেতর পড়ে খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খাল পুনঃখননের নামে খাল ভরাট করা হচ্ছে। সিডিউল অনুযায়ী খাল পুনঃখনন না করার কারণে ও খাল পুনঃখননে ব্যাপক অনিয়-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে এবং ফসলি জমি- মসজিদের রাস্তার ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষুব্ধরা খাল কাটার এস্কেভেটার মেশিন (ভেকু) বন্ধ করে দেয়।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারের প্রতিনিধি মো. শাহিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সিডিউল অনুযায়ী খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে।
বরিশাল বিএডিসি’র সহকারী প্রকৌশলী আতায়ী রাব্বি জানান, সিডিউল অনুযায়ী প্রতি কিলোমিটার খাল পুনঃখননে ঠিকাদার সর্বনি¤œ ১১ লাখ টাকা বিল পাবে। খাল পুনঃখননে অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিডিউলের কপি পেতে হলে তথ্য অধিকার আইনে বরিশাল বিএডিসি অফিসে আবেদন করতে হবে।
এএসআর/এমআর