
আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
স্কুলের দুই শিশু ছাত্র ফেরদৌস ফাহিম ও মোকছেদুল ইসলাম রাব্বিকে শিশু ছাত্রী টুম্পার বাবা মোঃ রাসেল গাজী বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত দুই ছাত্রকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে সোমবার বেলা ১০ টার দিকে আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ ঘটনায় ছাত্র মোকছেদুলের বাবা মহসিন হাওলাদার ওইদিন দুপুরে আমতলী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
জানাগেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রবিবার বিকেলে ছুটির পরে শিক্ষার্থীরা বাড়ী ফিরছিল। ফেরার পথে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র ফেরদৌস ফাহিম, চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্র মোকছেদুল ইসলাম রাব্বি, আরাফাত ও সাইমা আক্তার টুম্মা দুষ্টুমী করছিল। ওই সময় তাদের মধ্যে মনমালিন্য হয়। এ বিষয়টি সাইমা আক্তার টুম্পা তার বাবা রাসেল গাজীকে জানায়। এ ঘটনার জের ধরে সোমবার বেলা ১০টার দিকে টুম্পার বাবা রাসেল গাজী বিদ্যালয়ে এসে ফেরদৌস ফাহিম ও মোকছেদুলকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তিনি দুই ছাত্রকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে জখম করেছে। দুই ছাত্রকে রক্ষায় শিক্ষক শহীদুল ইসলাম এগিয়ে আসলে তাকেও অভিভাবক রাসেল গালাগাল করেছে। খবর পেয়ে দুই ছাত্রের অভিভাবকরা তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের তাদের ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্র মোকছেদুলের বাবা মহসিন হাওলাদার অভিভাবক রাসেল গাজীসহ দুইজনের বিরুদ্ধে আমতলী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার পরপরই টুম্পার বাবা রাসেল গাজী এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র ইয়ালহান ও রাসেদুল ইসলাম বলেন, স্কুল থেকে টুম্পার বাবা রাসেল গাজী ছাত্র ফাহিম ও রাব্বিকে ডেকে নিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। শহীদুল স্যার তাদের রক্ষার এগিয়ে গেলে তাকেও টুম্পার বাবা তাকে গালাগাল করেছে।
আহত ছাত্র ফেরদৌস ফাহিম ও মোকছেদুল ইসলাম রাব্বি বলেন, গতকাল বিদ্যালয় ছুটির পরে আমরা বাড়ী যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে আমাদের সঙ্গে টুম্পার কথা কাটাকাটি হয়। সোমবার বেলা ১০ টার দিকে টুম্পার বাবা আমাদের বিদ্যালয় থেকে ডেকে নিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। আমরা এ ঘটনার শাস্তি দাবী করছি।
দুই স্কুল ছাত্রের মা তানিয়া আক্তার ও আসমা বেগম বলেন, আমার ছেলেরা যতি অন্যায় করে থাকে, তাহলে শিক্ষকরা বিচার করতে পারতেন। শিক্ষকরা যদি বিচার করতো না পারতেন, তাহলে আমরা বিচার করতাম কিন্তু কেন আমার ছেলেদের আরেক ছাত্রীর বাবা মারধর করেছে ? আমরা এ ঘটনার বিচার দাবী করছি।
বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, দুই ছাত্রকে ছাত্রী টুম্পার বাবা রাসেল গাজী মারধর করছিল। আমি তাকে নিষেধ করলে আমাকেও তিনি গালাগাল করেছেন।
স্কুল ছাত্রী সাইমা আক্তার টুম্পার বাবা রাসেল গাজী মুঠোফোনে বলেন, আমার মেয়েকে কটুক্তি করায় ওদের কয়েকটি চর থাপ্পর মেরেছি।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সফিউল আলম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ঘটনা সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, দুই ছাত্রকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এক ছাত্রের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহৃ রয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর