গোপালগঞ্জ সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) অভিযান চালিয়ে টেন্ডার বানিজ্য, ভর্তিতে অনিয়ম, চাকরির বয়স সীমা অতিবাহিত হওয়ার পর নিয়োগ, নিম্মমানের পেপারে সার্টিফিকেট প্রদান, আসবাবপত্র ক্রয়ে অনিয়ম, কোটি টাকা ব্যায়ে দুইটি পানি শোধনাগার নির্মানণ অনিয়ম, বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর মুরাল নির্মাণ না করে টাকা উত্তলনসহ নানা অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার বেলা ১১ টায় টা থেকে ২ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালায়ে এসব অভিযোগের সত্যতা পায় দুদক।
দুদকের গোপালগঞ্জের সমন্বিত জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ( বশেমুরবিপ্রবি) আসবাবপত্র ক্রয়ে অনিয়ম দূর্নীতি , চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত বেঞ্চসহ নিম্নমানের মালামাল ক্রয়, কোটি টাকা ব্যায়ে দুইটি পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা ফেলা রাখা হয়েছে।
চাকরির বয়স সীমা ৩২ বছরের উপরে হলেও নিয়োগের শর্ত ভঙ্গ করে শারমিন চৌধুরীসহ কয়েক কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া,কফি হাউজ ও লেকপাড়ের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শেষ না করে বিল ঠিকাদারকে বিল প্রদান, লাইব্রেরীর জন্য অপ্রয়োজনীয় বিদেশি বই ক্রয় যা আসল বই নয়, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণে অনিয়ম ও দূর্নীতি , ৮ বছর আগে শুরু করা হলেও অদ্যবদি শেষ হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটোক নির্মাণের কাজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক (সাময়িক বরখাস্ত) তুহিন মাহমুদের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে কেনাকাটায় অনিয়ম। সহকারী রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম হীরার টেন্ডারবাজি, অনিয়ম ও দুর্নীতি করে বিপুল সম্পদ অর্জন । বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ টি কম্পিউটার চুরির মাস্টার মাইন্ডও তিনি।
এছাড়া কর্মচারী ও শিক্ষগণ চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত ভুয়া বিল-ভাউচার প্রস্তুত, কেনা-কাটা ও টেন্ডার, নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রথমিক সত্যতা মিলে দুদকের এ অভিযানে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. মশিউর রহমান নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট টীম ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালান। এ সময় বিভিন্ন ধরনের নথি যাচাই, কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন দুদকের কর্মকর্তারা।
অভিযানের বিষয়ে গোপালগঞ্জ দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, আজ ৯ রোববার) অভিযান পরিচালনা করার পর আমারা দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কয়েকটি সুপারিশ করেছি। সেগুলো হলো, প্রকল্পের অনিয়মের বিষয়ে প্রকাশ্য অনুসন্ধান,শারমিন চৌধুরী (সেকশন অফিসার) নিয়োগ কমিটির তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর সুপারিশ, তুহিন মাহমুদ ও নজরুল ইসলাম হীরার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলেন আদেশের সুপারিশ ।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শীতকালীন বন্ধ রয়েছে। খোলার পর অন্যান্য বিষয়ে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করব।
এসময় দুদকের গোপালগঞ্জের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ –পরিচালক মো. মশিউর রহমান, সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়, মো. সোহরাব হোসেন-সোহেল, মো.আল-আমিন হোসেনসহ এনফোর্সমেন্ট দলের সদস্যরা
উপস্থিত ছিলেন।
এইচবি/এমআর