চরফ্যাশসন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
চরফ্যাশন-মনপুরা ও চরফ্যাশন দশমিনা-চরকুকরি মুকরি, ঢালচন নৌ-পথে মেঘনা-তেতুলিয়া নদীর বেশ কিছু পয়েন্টে নাব্যতা সংকট ও ডুবোচরের কারণে প্রায়ই ও লঞ্চ-যাত্রী ও মালবাহী ট্রলার আটকে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এতে এ নৌ-পথে চলাচলকারী লঞ্চগুলোকে নির্ধারিত সময়ের ৫-৬ ঘণ্টা দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। শুকনো মৌসুমে মেঘনা ও তেতুলিয়া পানি কমে এ সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা।
যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, নাব্যতা সংকটের কারণে জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে, লঞ্চ ও ছোট যাত্রীবাহি ট্রলার চলে। এরপরও ডুবোচরে আটকে যায় এ নৌ-যানগুলো। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী ও শ্রমিকদের। পণ্য পরিবহনেও বিঘœ সৃষ্টি হয়।
ফেরী কর্তৃপক্ষ ও লঞ্চ মালিক- শ্রমিক সূত্রে জানাযায়, শুকনো মৌসুমে মেঘনা-তেতুলিয়া নদীতে পানি কম থাকলে এসব ডুবোচরে লঞ্চ-যাত্রীবাহী আটকে যায়। বার বার চেষ্টা করেও ডুবোচর থেকে লঞ্চ-ট্রলার ছাড়ানো যায় না। একপর্যায়ে চালক তখন লঞ্চটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। ভাটায় নদীতে পানি কমে যাওয়ায় ডুবোচরে ফেরি বা লঞ্চ আটকা পড়ে। জোয়ারের পানি না আসা পর্যন্ত এখানে থেমে থাকতে হবে।
যাত্রী আলী হোসেন বলেন, শুকনো মৌসুমে এলেই মেঘনা-মনপুরা নৌ-পথের ৭-৮ পয়েন্টে ভাটার সময় পানি কমে যায়। মাঝ পথে ডুবে চল পড়ে যায়। লঞ্চ-ট্রলার যাত্রী সার্ভিস ও স্পিটবোর্ড চলাচল ব্যাহত হয়। আর ডুবোচরে একবার আটকা পড়লে অনেক ৪-৫ ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়। এত ১-২ ঘন্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লেগে যায় প্রায় ৪-৫ ঘন্টা।
অভিযোগ করেন, যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ভোগের দিকটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখেও দেখছে না। মেঘনার ওই পয়েন্টগুলো ড্রেজিং করা হলে এ সমস্যা থাকতো না বলেও মতামত দেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চরফ্যাশনের বেতুয়া থেকে মনপুরা,কুকরি মুকিরী, ঢালচরসহ প্রায় ১০টি ইউনিয়নের নৌ-পথে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সুবিধার নেয়া হয়। এছাড়া এ সকল রুটে গড়ে প্রায় শতাধিক মালবোঝাই ট্রাক, বিভিন্ন ধরনের যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে।
এ সকল রুটে প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। কিন্তু মেঘনায় নাব্যতা সংকট এবং ডুবোচরের কারণে পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের প্রতিনিয়তই পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।
এ নৌ-পথে চলাচলকারী আবদুস ছালাম নামে এক যাত্রী বলেন, নাব্যতা সংকটের কারণে লঞ্চ,ট্রলার প্রায়ই আটকে যায়। এরপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় যাত্রীদের। এতে ঘাটে ৪-৫ দিন পর্যন্ত পণ্যবোঝাই শতাধিক ট্রাককে অপেক্ষায় থাকতে হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্র বলছেন, শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতা সংকট ও ডুবোচরের কারণে লঞ্চ মালটানা নৌ-যান চলাচল করতে পারে না। এতে ট্রিপ সংখ্যা কমে যায়, বেড়ে যায় যাত্রীদের ভোগান্তি। এ সমস্যার কথা প্রতি বছরই ঊর্ধ্বতনদের জানানো হয়।
বিআইডব্লিউটিএ ভোলা নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ডুবোচরের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বা লঞ্চের মালিকরা লিখিতভাবে জানালে তিনি ড্রেজিংয়ের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে নব্যতা সংকটের জন্যে চেষ্টা থাকবে।
এএইচ/এমআর