ছাতক(সুনামগঞ্জ) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদীর তীরে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগে ট্রাক ও চালকসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ছাতক সেনা ক্যাম্পের অধিনায়কের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। খবর পেয়ে ছাতক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে অবৈধ ভাবে মাটি কাটার অপরাধে দু’জনকে আটক করা হয়। ট্রাকে ভর্তি মাটি পুনরায় কর্তন স্থানে ফেলার পর ট্রাকটিও আটক করে যৌথবাহিনী। বিষয়টি অবহিত করা হলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু নাছের।
আটককৃতরা হলেন- পৌরসভার বাশখালা গ্রামের জুবেদ আলীর ছেলে আতাউর রহমান (৩৮) ও উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের মৃত আবদুল হেকিমের ছেলে ট্রাক চালক মখলিছ মিয়া (৪০)।
জানা যায়, হেমন্তে সুরমা নদীর তীরে জেগে উঠা চরের মাটি গেল কয়েকদিন ধরে এখান থেকে অবৈধ ভাবে বিক্রি করে আসছিল সাজ্জাদ মাহমুদ মনির সিন্ডিকেট। প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার সকাল থেকে সুরমা নদীর ছাতক লাফার্জ ফেরিঘাটের দক্ষিন বাগবাড়ি এলাকায় মাটি কেটে ট্রাক যোগে অবৈধ ভাবে বিক্রি করা হচ্ছিল। এমন সংবাদ পেয়ে ছাতক সেনা ক্যাম্পের অধিনায়কের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। খবর পেয়ে ছাতক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে অবৈধ ভাবে মাটি কাটার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় চক্রের সদস্যদের। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা বৈধ কোন প্রমান দেখাতে পারেনি। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু নাছের।
এদিকে, গ্রেফতারকৃত আতাউর রহমান যৌথ বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে প্রকাশ্যে জানিয়েছে, লাফার্জ হোলসিমের ফেরি চালক আবুল বশরের ছেলে সাজ্জাদ মাহমুদ মনিরের কাছ থেকে তারা সুরমা নদীর তীরের মাটি টাকার বিনিময়ে ক্রয় করেছেন। এর আগেও এখান থেকে তার কাছ থেকে মাটি ক্রয় করে নিয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আতাউর রহমান আরও জানায়, সাজ্জাদ মনির তাদেরকে বলেছে, এটা তাদের লিজকৃত ভূমি মাটি বিক্রির টাকা তারা চারজনে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। অন্যরা হলেন, জসিম উদ্দিন, নোমান ইমদাদ কানন ও খায়ের উদ্দিন।
সূত্রে জানা গেছে, এই সাজ্জাদ মনির একজন ইয়াবা সেবনকারী। সে মাদকসহ সকল অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত। ইয়াবা সেবনের তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি প্রচার হয়েছিল। এছাড়া লাফার্জ ফেরিঘাট সংলগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগের সরকারী বাসায় বসবাস করার সুযোগে এই সাজ্জাদ মাহমুদ মনির সরকারী জায়গা থেকে অবৈধ ভাবে মাটি, পাথর, বালু উত্তোলন করে এবং সরকারী অসংখ্য গাছ-গাছালি বিক্রি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। অভিযোগ উঠেছে তাকে সহযোগিতা করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র ও সওজ বিভাগের অসাধু কিছু কর্মকর্তারা। লাফার্জের ফেরি চলাচল বন্ধ হলেও সরকারী বাসায় এখনও বসবাস করে আসছে সে এবং তার পরিবার। এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
এব্যাপারে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কিবরিয়া হাসান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।
এএমএল/এমআর