গলাচিপায় পথ আটকে ১৭বছর অবরুদ্ধ অসহায় পরিবার!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » গলাচিপায় পথ আটকে ১৭বছর অবরুদ্ধ অসহায় পরিবার!
বুধবার ● ২৩ অক্টোবর ২০২৪


গলাচিপায় পথ আটকে ১৭বছর অবরুদ্ধ অসহায় পরিবার!

গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

জায়গা আছে, ঘর আছে কিন্তু নেই কোন আসা-যাওয়ার পথ, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ। বসবাসের অনুপোযোগী হওয়ায় বসবাস না করার কারণে এ যেন ভূতুড়ে বাড়ি। সরেজমিনে গিয়েও ঘটনার সত্যতা খুঁজে পাওয়া গেছে, ভুক্তভোগী পরিবারটি নিজের বাসা থাকতে ভাড়া বাসায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। হ্যা এমন ঘটনাই ঘটেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা লিপি বেগমের ভাগ্যে। এ বিষয়ে ভূক্তোভোগী লিপি বেগম জানান, তার নানা মৃত নুরুল ইসলাম তালুকদার হাদিস মিয়ার কাছ থেকে ক্রয়কৃত সম্পত্তি পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে খাদ্য গুদামের পূর্ব পার্শ্বে গলাচিপা মৌজায় জেএল-৪৯ ও ৫৮/৫৯ নম্বর দাগে ১২ শতাংশ জমি রেখে যান। তার নানার সেই সম্পত্তি থেকে ২০০৬ ইং সালে নানী, এক মামা, চার খালার কাছ থেকে ক্রয়কৃত ০.০৫ শতাংশ ও মা মৃত জহুরা বেগমের অংশসহ মোট ০.০৫৬২ শতাংশ জমির মালিক হন। জমি ক্রয়ের পরে তৎকালীন পৌর মেয়র মরহুম ওহাব খলিফা, কাউন্সিলর ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিলে পাশ্ববর্তী জমির মালিক নেছার মেম্বরদের ১.৫০ ফুট ও নিজেদের ১.৫০ ফুটসহ মোট ৩ ফুট যৌথভাবে যাতায়াতের জন্য রেখে বাকি জমি বন্টন করে দেয়া হয়। যেহেতু সামনের অংশে তার আপন মামা আলাউদ্দিন তালুকদার পৈতৃক ভিটায় দীর্ঘ দিন বসবাস করে আসছিলেন তাই তাকে সামনের অংশে রেখে লিপি বেগমকে পিছনের অংশ বুঝিয়ে দেয়া হয়। এরপরে বন্টনকৃত নিজ জায়গায় লিপি বেগম একটি ঘর নির্মাণ করে। ঘর নির্মাণ করার পরক্ষণেই তার মামা আলাউদ্দিন তালুকদার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে যাতায়াতের জন্য একমাত্র যৌথ পথটি পাঁকা দেয়াল তৈরি করে আটকে দেয়। এছাড়া পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের বাঁধার কারণে সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নিকট ছুটোছুটি করেও মেলেনি কোন সুরাহা। বর্তমানে তার মামা ও মামাতো ভাই মৎস্যজীবি লীগ নেতা তমাল তালুকদার নগদ ২ লাখ টাকা, ১.৫০ ফুট প্রসস্থ পথের পরিবর্তে নির্ধারিত জমি ও উক্ত পথের জায়গা রেখে পাঁকা সীমানা প্রাচীর তৈরি করে দেওয়ার দাবি করে। বাস্তবে ১.৫০ ফুট যাতায়াত পথ দিয়ে হাঁটাচলা করা অসম্ভব। অথচ সরকারি নিয়মানুযায়ী রেকর্ডীয় শরীকানা জমিতে যৌথ যাতায়াত পথ বাধ্যতামূলক থাকতে হবে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবে দীর্ঘ ১৭ বছর অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ পাননি বলে জানান লিপি। তাই তিনি মানবিকতার দিক থেকে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে যে অধিকার পাওয়া উচিৎ তা নিশ্চিতে বর্তমান সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ বিষয়ে আলাউদ্দিন তালুকদার কাছে মুঠোফোনে জানার জন্য বার বার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উক্ত বিষয়ে তৎকালীন সাবেক কাউন্সিলর মাওলানা আ. জব্বার জানান, সেই সময় পৌর মেয়র ওহাব খলিফাসহ আমি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা মিলে আসা যাওয়ার পথের জায়গা যৌথ রেখে বাকি জমি বন্টন করে দেয়া হয়। পরোক্ষভাবে আমি জানতে পেরেছি সেই পথের জায়গা দেয়াল করে আটকে দেয়া হয়েছে। আমার দৃষ্টিতে এটা অমানবিক।
এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. নাসিম রেজা জানান, সরকারি আইনে এ ধরনের যাতায়াত পথ আটকে রাখার বিধান নেই। অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এসডি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:৫০:৩০ ● ২৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ