কলাপাড়ায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » কলাপাড়ায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি
মঙ্গলবার ● ২২ অক্টোবর ২০২৪


কলাপাড়ায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পশ্চিম লোন্দা গ্রামে অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবন থেকে বাড়ি-ঘর, চলাচলের রাস্তাঘাট, কৃষিজমি রক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে পাউবোকে আবেদন জমা দিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এবং এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার সকাল এগার টায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলাপাড়া অফিসে ভুক্তিভোগীরা নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর এই আবেদন জমা দেন। নির্বাহী প্রকৌশলীর পক্ষে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ শাহ আলম ভূঁইয়া আবেদন গ্রহণ করেন। এই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম ফকু, মোঃ জাহিদুল ইসলাম শাহীন, মোঃ সেলিম মোল্লা, মোঃ সোহেল মোল্লা, ভুক্তভোগী কৃষক মো: মোশারফ হাওলাদার, মোঃ নূর হোসেন, মোসাঃ হালিমা আয়শা এবং মেহেদী হাসান সহ প্রমুখ। এই সময়ে ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, ‘পশ্চিম লোন্দা গ্রামের ২৫০ টি দরিদ্র পরিবার প্রায় ৪০ বছর ধরে বসবাস করছি। আমরা জোয়ার ভাটায় ডুবি ভাসি। আমরা বেঁচে থাকার জন্য, কৃষি জমি রক্ষায় একটি টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।

প্রাকৃতিক দূর্যোগ ঘূর্ণিঝড় ছাড়াও অমাবস্যা-পূর্নিমায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ডুবে ভাসি। মানবেতর জীবনযাপন করছি। ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না। তাই স্লুইসগেটসহ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাই। অসহনীয় দূর্ভোগ থেকে আমাদের বাচানো হোক।’

কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পশ্চিম লোন্দা গ্রামে টিয়াখালী নদীর তীরে জেগে চরে দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছে প্রায় ২৫০টি পরিবার। যাদের অধিকাংশ বসতভিটা এবং ফসলী জমি বিএস জরিপে মালিকানা রেকর্ড হয়। কিছু পরিবার সরকারের খাস জমিতে বন্দোবস্ত নিয়ে বসবাস করছেন। বহুদিনে গড়ে উঠেছে এই জনপদটি। টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকার ফলে প্রতিনিয়ত অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে থাকে ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট এমনকি ফসলী জমি। জমিতে বীজ বোপনের পর আতংকে থাকে কৃষক। কখন পানি উঠে সব তলিয়ে যায়।

বক্তারা বলেন, জোয়ার-ভাটা আমাদের এলাকার প্রায় ২৫০ পরিবারের ঘর-বাড়ি পানিতে ডুবে যায়। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না। রান্না ঘরে পানি উঠে যাওয়ার কারণে আমরা রান্না করতে পারি না। বিগত দিনে ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময়ে ৪ দিন পর্যন্ত আমাদের বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে ছিল। জোয়ার-ভাটা কৃষি জমি তলিয়ে যাওয়ার কারণে বছরে একবার চাষাবাদ করতেও আমাদের কষ্ট হয়।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সোহেল মোল্লা বলেন, আমাদের প্রায় ২০০ একর জমি তলিয়ে থাকে। তিন ফসলী এই জমি অথচ আমরা এক ফসলও চাষাবাদ করতে পারি না। আমরা অনেক কষ্টের মাঝে আছি। আমাদের এখানে একটা টেকসই বেড়িবাঁধ খুবই প্রয়োজন।

হালিমা আয়শা বলেন, আমরা এই এলাকার কয়েকজন স্বেচ্ছাসেববক মিলে দীর্ঘ দুইমাস ধরে একটি গবেষণা করেছি। আমাদের গবেষণায় এই এলাকার বিভিন্ন সমস্যা পেয়েছি যার মধ্যে কৃষি উৎপাদন সমস্যা পেয়েছি হওয়া, যাতায়ত ব্যবস্থার সমস্যা পেয়েছি। বাচ্চাদের স্কুলে যেতে অনাগ্রহী। সুচিকিৎসার অভাব। সব কিছুর মূলে গিয়ে একটা সমস্যা পেয়েছি যে টেকসই বেড়িবাঁধ নেই।

মেহেদী হাসান বলেন, যদিও আমি এই এলাকার ভোক্তভোগী না। এলাকার সমস্যা নিয়ে দুই মাস ধরে কাজ করছি। এখানে প্রায় ২৫০টি পরিবার জোয়ার আসলেই ঘরে পানি উঠে যায়। এমনকি ঘূর্ণিঝড় তো দূরের কথা বর্ষার সময়ে ঘরে পানি উঠে যায়।


এসএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৪৭:২৮ ● ৩২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ