সাগরকন্যা আন্তর্জাতিক ডেস্ক॥
আত্মঘাতী হওয়ার আগে ব্রাজিলের দুই তরুণ তাদের সাবেক স্কুলের অন্তত পাঁচ কিশোরবয়সী শিক্ষার্থী ও দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। স্কুলটিতে প্রবেশের আগে আরও একজনকে হত্যা করে তারা। এই মর্মন্তিক ঘটনাটি ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বাইনে সংঘটিত হত্যাকা-ের ঘটনার অনুকরণে ঘটানো হয়েছে বলে ব্রাজিলীয় পুলিশের ভাষ্য, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের শহর সাও পাওলো শহরের নিকটবর্তী সুজানো এলাকার হাউ ব্রাজিউ স্কুলে প্রবেশের আগে স্কুলটির ১৭ ও ২৫ বছর বয়সী দুই সাবেক ছাত্র এক ভাড়া গাড়ি সংস্থার মালিককে হত্যা করে। নিহত এই ব্যক্তি সম্পর্কে ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরের চাচা হন। চাচাকে হত্যার পর তার প্রতিষ্ঠান থেকে একটি গাড়ি চুরি করে তারা। সাও পাওলো পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় দুই হামলাকারীসহ মোট ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহত শিক্ষার্থীদের প্রায় সবার বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। দুই হামলাকারীকে গিলার্মি তাওসে মন্তাইরো (১৭) ও লুয়িজ হেনরিক দ্য কাস্ত্রো (২৫) বলে শনাক্ত করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ১৭ বছর বয়সী মন্তাইরো নেতা ও প্রধান পরিকল্পনাকারী ছিল বলে এক তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন। আরও ১০ জন, যাদের অধিকাংশই স্কুল শিক্ষার্থী, গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্লোবো টেলিভিশনে সম্প্রচারিত অপেশাদারভাবে ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, স্কুলের শিক্ষার্থীরা চিৎকার করছে, দৌড়াচ্ছে আর প্রাণ ভিক্ষা চাইছে, একই সময় গুলির তীব্র শব্দও শোনা যাচ্ছে। আশপাশের বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা স্কুলের বাউন্ডারি দেয়ালের ওপর দিয়ে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে ঝেড়ে দৌড় দিচ্ছে ও সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুই হামলাকারী এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এ হামলার পরিকল্পনা করেছে। তারা কলম্বাইনের হত্যাকা- থেকেও ‘বেশি মনযোগ পাবে’ এমন আশা করছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে কলরাডোর কলম্বাইন হাই স্কুলে দুই শিক্ষার্থীর হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছিল। হামলাকারীরা অন্তত একটি পয়েন্ট ৩৮ ক্যালিবারের পিস্তল ও স্পিড লোডার, একটি ক্রসবো, কয়েকটি ছুরি, একটি কম্পাউন্ড বো ও তীর এবং মলোটোভ ককটেল ব্যবহার করেছে বলে জানিয়েছেন সাও পাওলো রাজ্য পুলিশের কমান্ডার মার্সেলো সালাস। কী কারণে তারা এমনটি করেছে তা পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। ব্রাজিল বিশ্বের অন্যতম সহিংসতা কবলিত দেশ হলেও এখানে স্কুলে গোলাগুলির ঘটনা বিরল।