সাগরকন্যা আন্তর্জাতিক ডেস্ক॥
প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মের ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া বাতিল করে দেওয়ার পর এবার কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবও নাকচ করেছে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ফের ভোটাভুটিতে যাচ্ছে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট, যেখানে এমপিরা ঠিক করবেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার জন্য আরো সময় চাওয়া হবে কিনা। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামি ২৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ ঘটার কথা। কিন্তু কীভাবে সেই বিচ্ছেদ ঘটবে তা নিয়ে ব্রিটিশ এমপিরা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারায় পুরো ব্রিটেনকে ঘিরে ধরেছে গভীর অনিশ্চয়তা। ২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়। ভোটে হারের পর রক্ষণশীল দলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করলে টেরিজা মে সেই দায়িত্ব নিয়ে বিচ্ছেদের পথরেখা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেন। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই জোট থেকে কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য আলাদা হবে এবং এরপর ইইউভুক্ত বাকি ২৭টি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই পথ বের করার জন্য সময় নেওয়া হয় ২১ মাস। আগামী ২৯ মার্চ সেই সময়সীমা উত্তীর্ণ হওয়ার আগে যুক্তরাজ্যকে তার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দীর্ঘ দর কষাকষির মাধ্যমে ব্রেক্সিট চুক্তির একটি খসড়া তৈরি করেন টেরিজা মে। কিন্তু গত জানুয়ারিতে পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে তা বিপুল ভোটে বাতিল হয়ে যায়। এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ফের বসেন মে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে চুক্তির খসড়ায় কিছু বিষয়ে তিনি পরিবর্তন আনেন। কিন্তু তার সেই প্রস্তাবও মঙ্গলবার বাতিল করে দেন ব্রিটিশ এমপিরা। এই পরিস্থিতিতে যে বিকল্পগুলো ব্রিটেনের সামনে ছিল তার একটি হল ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’। অর্থাৎ, ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এমনিতেই বেরিয়ে যাবে, কোনো চুক্তি হবে না। সেক্ষেত্রে বিচ্ছেদ হবে হুট করেই, বিচ্ছেদ পরবর্তী সম্পর্ক কেমন হবে, ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কর কাঠামো কেমন হবে, কূটনৈতিক সম্পর্কের ধরণই বা কী হবে- সেসব বিষয় অনির্ধারিতই থেকে যাবে। গতকাল রাতে সেই প্রশ্নে হাউস অব কমন্সের ভোটাভুটিতে ৩১২ জন এমপি চুক্তি ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন্ আর পক্ষে ভোট পড়ে ৩০৮ জনের। বিবিসি লিখেছে, ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী বুধবারে ভোটের ফলাফল সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। অর্থাৎ সরকার চাইলে এখনও কোনো চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।