গৌরনদীতে মাদ্রাসা ছাত্রকে শিকলে বেঁধে পেটানো শিক্ষক গ্রেফতার!

প্রথম পাতা » বরিশাল » গৌরনদীতে মাদ্রাসা ছাত্রকে শিকলে বেঁধে পেটানো শিক্ষক গ্রেফতার!
সোমবার ● ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪


গৌরনদীতে মাদ্রাসা ছাত্রকে শিকলে বেঁধে পেটানো শিক্ষক গ্রেফতার!

গৌরনদী (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের লক্ষনকাঠি গ্রামের হাজী আব্দুল হাই-কুলসুম হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ জিহাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে পায়ের সাথে কোমরে শিকল দিয়ে বেঁধে মাদ্রাসার নাজেরা শাখার ছাত্র তরিকুল ইসলাম (১১)কে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ সোমবার সন্ধ্যায় এজাহারভূক্ত প্রধান আসামি মাদ্রাসার শিক্ষক জিহাদুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে। নির্যাতিত ও আহত তরিকুল উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট এলাকার মৃত আউয়াল হাওলাদারের ছেলে।
ওই মাদ্রাসার নাজেরা শাখার নির্যাতিত ছাত্র তরিকুল হাওলাদার জানায়, ক্লাসে পড়ানোর সময় শনিবার বিকাল তিনটার দিকে অন্য এক ছাত্রের সাথে কথা বলার অভিযোগে তাকে আধা ঘন্টার মত দাড় করিয়ে রাখেন শিক্ষক (ছোট হুজুর) হাফেজ জিহাদুল ইসলাম। এসময় তার (তরিকুল) প্রসাবের চাপ শুরু হলে টয়লেটে যাওয়ার কথা জাানয়। কিন্তু ছোট হুজুর তাকে টয়লেটে যেতে না দিয়ে হুজুরের কাছে যেতে বলেন। পেটানোর ভয়ে সে হুজুরের কাছে না যাওয়ায় দুইজন ছাত্রকে দিয়ে ধরে নিয়ে তাকে পেটানো হয়। এরপর হুজুরে তাকে কান ধরে দাড়িয়ে থাকতে বলেন। হুজুরের (শিক্ষক) কথামত কান ধরে দাড়িয়ে না থাকায় তাকে (তরিকুল) অন্য ছাত্রদের দিয়ে কান টান দেওয়ায় এবং কানধরে ওঠবস করায়। কৌশলে ওই ২ ছাত্রের হাত থেকে ছুটে সে (তরিকুল) মাদ্রাসার বাইরে চলে যায়। এসময় তাকে ধরে এনে পায়ে ও কোমরে শিকল দিয়ে বেঁধে পেটানো হয়। সারারাত শিকলবন্ধী করে রাখার পর নির্যাতন সইতে না পেরে রোববার বেলা এগারটার দিকে সে ( ছাত্র তরিকুল) শিকল ভেঙ্গে বাড়িতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
ভুক্তভোগি ছাত্রের ভাই মাসুম হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইকে শিকল দিয়ে প্রায় ২০ ঘন্টা বেঁধে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিষয়টি মাদ্রাসার পরিচালক দাদন মিয়া ও বড় হুজুর (প্রধান হাফেজ) ইলিয়াস হোসাইনকে বলেছি। তারা কোন বিচার না করায় অভিযুক্ত শিক্ষকসহ তাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা নির্যাতনকারী শিক্ষকসহ জড়িতদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও বিচার দাবি করছি।
অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ জিহাদুল ইসলাম বলেন,  ছাত্র তরিকুলকে মারধর করা হয়নি। কিছু সময় তাকে শিকলবন্ধী করে  রাখা হয়েছিল।
গৌরনদী থানার নবাগত ওসি মোঃ ইউনুস মিয়া বলেন, নির্যাতিত ছাত্রের মা মিনারা বেগম বাদি হয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ জিহাদুল ইসলাম, প্রধান হাফেজ ইলিয়াস হোসাইনসহ তিনজনকে আসামি করে সোমবার বিকালে থানায় শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার দায়েরের পর তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে এজাহারভূক্ত প্রধান আসামি মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ জিহাদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চলছে।

এএসআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩৪:২৯ ● ৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ