নেছারাবাদে ইউএনও’র স্বাক্ষর জালিয়াতি অভিযোগ!

প্রথম পাতা » বরিশাল » নেছারাবাদে ইউএনও’র স্বাক্ষর জালিয়াতি অভিযোগ!
সোমবার ● ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪


নেছারাবাদে ইউএনও’র স্বাক্ষর জালিয়াতি অভিযোগ!

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পিরোজপুরের নেছারাবাদে ইউএনও’র সীল ও স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার বড়ালের বিরুদ্ধে। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানগারের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে আর্থিক অনুদান প্রাপ্তির জন্য ইউএনও এর সীল স্বাক্ষর নকল করে ভুয়া প্রত্যয়ন তৈরীর অভিযোগ ওঠে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার পূর্বজলাবাড়ী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন।
জানা যায়, নেছারাবাদের তেরটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানগারের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান এর প্যাড ও সিলসহ স্বাক্ষর নকল করেন। সেই সীল স্বাক্ষর ব্যবহার করে অনুদান প্রাপ্তির জন্য ইচ্ছামত প্রত্যয়নপত্র প্রস্তুত করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বরাবর দাখিল করেন শিক্ষক সঞ্জয় বড়াল। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানতে পেরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তপূর্বক রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। শিক্ষা অফিসার মো: জাহাঙ্গীর আলম তদন্তে সত্যতা পেয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানিয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনিয়মিত রয়েছেন।
এ বিষয়ে আমির হোসেন প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লিয়াকত আলী হাওলাদার
বলেন, তার বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানগারের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয়ে এক লক্ষ টাকা সরকারি অনুদান পাওয়া যাবে। এমন একটি কথা বলেন প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার বড়াল। আমি সরল বিশ্বাসে তাকে বিদ্যালয়ের কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়েছিলাম। বরাদ্দ আসলে তাকে কিছু চা খরচ দিলেই হবে। এই বরাদ্দ পেতে ইউএনও এর প্রত্যায়ন দরকার তা আমার জানা ছিলনা। পরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পারি সঞ্জয় কুমার বড়াল ইউএনও এর ভুয়া সীল স্বাক্ষর ব্যবহার করে আমার প্রতিষ্ঠানের নামে মন্ত্রানালয়ে অনুদানের আবেদন করেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানগারের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয়ে এক লাখ টাকা অনুদান নেয়া যায়। সে অনুদানের জন্য সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যায়ন দরকার। পূর্বজলাবাড়ী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এন্ড কলেজ এর প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার বড়াল তেরটি বিদ্যালয়ের কাগজপত্র সংগ্রহ করে এবং ইউএনও সীল প্যাড, স্বাক্ষর নকল করে মনগড়া প্রত্যায়ন বানিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ে অনুদানের জন্য আবেদন করেন। ইউএনও মহোদয় মন্ত্রনালয় থেকে হোয়াটসএ্যাপের মাধ্যমে ম্যাসেজে বিষয়টি জানতে পেরে আমাকে তদন্ত পূর্বক রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। আমার তদন্তে প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার বড়ালের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য প্রমানিত হয়। আমি তদন্ত রিপোর্টে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্ত সঞ্জয় কুমার বড়ালের সাথে গত দু’দিন ধরে দেখা করে কথা বলার জন্য চেষ্টা করলেও তার সাক্ষাৎ মেলেনি। এমনকি তার ব্যবহৃত ০১৭১৬-১৫৪৫৬২ ফোন নাম্বারটি বন্ধ রয়েছে। পরে তার বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক তরুন বড়াল বলেন, শুনেছি, প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার বড়ালের সাথে ইউএনও অফিসের সাথে একটু সমস্যা হয়েছে। স্যার শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারন দেখিয়ে তিন দিনের ছুটিতে আছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরুজ্জামান জানান, আমার স্বাক্ষর নকল করে বরাদ্দের জন্য মনমতো প্রত্যায়ন বানিয়ে ওই শিক্ষক এসব করেছেন। বিষয়টি তদন্তর জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

 

 

আরএ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ০:১৫:৪১ ● ২৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ