বর্ষা মৌসুমে আউশ ধানের উৎপাদন ও গবেষণায় জোর দিচ্ছে কৃষি বিভাগ

প্রথম পাতা » জাতীয় » বর্ষা মৌসুমে আউশ ধানের উৎপাদন ও গবেষণায় জোর দিচ্ছে কৃষি বিভাগ
বৃহস্পতিবার ● ১৪ মার্চ ২০১৯


বর্ষা মৌসুমে আউশ ধানের উৎপাদন ও গবেষণায় জোর দিচ্ছে কৃষি বিভাগ

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

কৃষি বিভাগ দেশে বোরো উৎপাদন স্বাভাবিক রেখে বর্ষা মৌসুমে আউশ ধানের উৎপাদন ও গবেষণায় জোর দিয়েছে। মূলত ধান উৎপাদনে সেচ খরচ ও সার্বিকভাবে পানির ব্যবহার কমাতেই এই উদ্যোগ। আর তার অংশ হিসাবে সম্প্রতি ৩টি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি আউশের নতুন একটি হাইব্রিড জাত নিয়েও গবেষণা প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাছাড়া চলতি মাসে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে আউশের নতুন একটি হাইব্রিড জাতের ধানের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। কৃষি বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এক কেজি বোরো ধান চাষে ৩ হাজার ২শ লিটার পানি লাগে। বছরের পর বছর বোরো ধান চাষের কারণে ইতিমধ্যে দেশের পানির স্তর ৭-৮ মিটার নিচে নেমে গেছে। ফলে গভীর নলকূপ ও ইঞ্জিনচালিত শ্যালো টিউবওয়েল ছাড়া পানি তোলা যায় না। এমন অবস্থার দেশে খাবার পানির সংকট দিন দিন তীব্র হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। সে বোরোর আবাদি এলাকা আর বাড়ানো হবে না। সে কারণে আউশ ধান উৎপাদনে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আগামী মৌসুমে আউশের জন্য ১৩ লাখ হেক্টরে আবাদ করা হচ্ছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ লাখ টন। আউশ একটি মৌসুমের ধান, বর্ষার মধ্যে ওই ধান হয়। ফলে বাড়তি কোন সেচের প্রয়োজন হয় না। তবে কোনো কারণে বৃষ্টি না হলে সম্পূরক সেচের প্রয়োজন হয়।
সূত্র জানায়, দেশে ৯৪ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে ৩ মৌসুমে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়। তার মধ্যে বোরোর আওতায় জমি প্রায় ৪৮ লাখ হেক্টর, আর উৎপাদন ১ কোটি ৯০ লাখ টনের বেশি। আমনের আওতায় জমি ৫৬ লাখ হেক্টর এবং উৎপাদন ১ কোটি ৩০ লাখ টনের বেশি। আউশের আওতায় জমি ছিল ১১ লাখ হেক্টর। আর উৎপাদন প্রায় ২৭ লাখ টন। কিন্তু গতবছরের চেয়ে এবার আউশের উত্পাদন ৯ লাখ টন বাড়বে।
সূত্র আরো জানায়, দেশের কৃষকরা প্রথমবারের মতো আউশের হাইব্রিড নতুন ধান পেল। সম্প্রতি সরকার নতুন ওই জাতের অনুমোদন দেয়। বেসরকারিভাবে গোল্ডেন বার্ন কিংডম প্রাইভেট লি. ওই জাতের নিবন্ধন পেল, যার নাম জিবিকে হাইব্রিড ধান-২। চীন থেকে আমদানি করা ওই জাতটির চাল সরু, গড় জীবনকাল ১১৩ দিন এবং গড় ফলন হেক্টর প্রতি প্রায় ৫ টন। জাতটি বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে আবাদের অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিকে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর জানান, এক সময় আউশের এলাকা বেশি ছিল। কিন্তু বোরো আসার পর ওই ধানে কৃষকরা বেশি আগ্রহী হয়ে উঠে। কিন্তু ওই ধান আবাদে প্রচুর পানি লাগে। কিন্তু আউশ ধান উৎপাদনে বাড়তি পানি প্রয়োজন নেই। যে কৃষি বিভাগ ওই জাতের ধান গবেষণায় বাড়তি নজর দিয়েছে। গতবছর আউশের ৩টি নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। তাছাড়া আগামীতে আউশের হাইব্রিড ধানও আসবে। ধানের মোট ৮৮টি জাত রয়েছে। তার মধ্যে আউশের জাত ২৪টি।
অন্যদিকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রধান বীজ তত্ত্ববিদ কৃষিবিদ আজিম উদ্দিন জানান, দেশে প্রথম আউশ ধানের হাইব্রিডের জাতের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আর এ জাতটি কৃষকরা আবাদের মাধ্যমে আউশের উৎপাদন আরো বাড়বে ধারণা করা হচ্ছে।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৫:২২:৫৫ ● ৯৯৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ