বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গলাচিপার ৪জন নিহত

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গলাচিপার ৪জন নিহত
শুক্রবার ● ৯ আগস্ট ২০২৪


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গলাচিপার ৪জন নিহত

গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পটুয়াখালীর গলাচিপায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৪জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন মো. জাহাঙ্গীর খান (৪০), টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার আতিকুল ইসলাম রুবেল (৩৪), মোহাম্মদ সাগর গাজী ও মোহাম্মদ রাসেল। এ চারজনের পরিবারগুলোর প্রশ্ন তারা কি সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের সুবিধা পাবেন? জাহাঙ্গীর খান গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাউরিয়া এলাকার মৃত রত্তন আলী খানের ছেলে।
গত ২০জুলাই দুপুরে ঢাকায় যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় তার মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতেই তার মৃত্যু হয়। লাশ গলাচিপায় নিজ বাড়িতে এনে দাফন করা হয়। জাহাঙ্গীরের স্ত্রী মমতাজ বেগম জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে তিনি এখন অথৈই সাগরে পড়েছেন। গত ১৯ জুলাই বিকেলে ঢাকার মিরপুর এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের এলোপাথারি গুলিতে মারা যান টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার আতিকুল রহমান রুবেল (৩৪)। গলাচিপা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের রুপনগর এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম মাস্টারের চার ছেলের মধ্যে ছোট রুবেল। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনিই ছিলেন স্বাবলম্বী। তাই পরিবারকে সহযোগিতা করতেন তিনি। সাত বছর আগে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে আলিসবা ইসলাম ফারিস্তা নামের ১৭ মাস বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। স্ত্রী মোসা. তামান্না কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, আমার স্বামীকে কেন মারা হলো? এর দায় কে নেবে? উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে ছেলে মোহাম্মদ রাসেলকে (১৮) সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করেন তার বাবা আবুল হোসেন। গত ৫ আগস্ট সকালে ঢাকার দনিয়ার কাজলা এলাকায় এলোপাথারি গুলিতে নিহত হন রাসেল। পরের দিন তার বাড়ি গলাচিপা উপজেলার চর কাজল ইউনিয়ন চর শিবা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। এদিকে সাগরের স্বপ্ন নিভে গেল মাত্র ২০ বছর বয়সেই। গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের পূর্ব পাড় ডাকুয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাগর। তিনি তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। এইচএসসি পাস করে ভালো চাকরি নিয়ে হাল ধরবে পরিবারের। অভাবের সংসারে দুই মাস চাকরিও করছিলেন তিনি। সোমবার শেষ বেলায় ঢাকার উত্তরার জসিম উদ্দিন ফ্লাইওভার এলাকায় গুলি লাগে সাগরের মাথায়। নিভে যায় সাগরের পরিবারের স্বপ্ন। বাবা সিরাজুল ইসলাম জানান, গ্রামে মাত্র ৬০ শতাংশ জমি রয়েছে। কীভাবে এখন সংসার চালাব আমি? গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, নিহতদের পরিবারদের ব্যক্তিগতভাবে সহায়তা করেছি। এখনো সরকারি কোনো অনুদান আসেনি। অনুদান পেলে সবাইকে দেয়া হবে।

এসডি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২২:০৫:৫০ ● ৬৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ