কোটা আন্দোলনে নিহতচরফ্যাশনে হোসেন’র মা এখন বাকরুদ্ধ!

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » কোটা আন্দোলনে নিহতচরফ্যাশনে হোসেন’র মা এখন বাকরুদ্ধ!
বৃহস্পতিবার ● ১ আগস্ট ২০২৪


চরফ্যাশনে হোসেন’র মা এখন বাকরুদ্ধ!

চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

আমার স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে কাজের উদ্দ্যেশে ঢাকাতে চলে যাই। সেখানে গিয়ে ইট ভেঙ্গে টাকা উপার্জন করে সংসার পরিচালনা করেছি। ছেলেকে তিলে তিলে বড় করেছি। সে যখন বড় হয়েছে, নিজেই বুঝতে শুরু করেছে তখন ঢাকাতে ট্রাকের হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করে। পর্যায়ক্রমে ট্রাক চালাতে শুরু করে। তাকে বিয়ে করানোর পর তার দুই সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। ছেলের কর্মের টাকা আর আমার ইট ভাঙ্গা টাকা দিয়ে কোন রকম পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে জীবন পার করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি আজ। কিভাবে জীবন পার করবো দুই নাতনি ও পুত্রবধূকে নিয়ে। কোন কুলকিনারা খুঁজে পাচ্ছি না। এভাবে কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলেছেন, কোটা সংসারের দাবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার চাঁদ উদ্যান গেটে শিক্ষার্থী-পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত মো. হোসেনের মা রিনা বেগম। হোসেনের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তার মা ও স্ত্রীসহ দুই সন্তান।
বাকরুদ্ধ দুই সন্তান ও মায়ের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে বাড়ীর পরিবেশ। ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার রাত ৩ টার দিকে হোসেন মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান গেটে ট্রাক বন্ধ করে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। পরদিন তাকে গ্রামের বাড়ীতে এনে দাফন করে পরিবার।
নিহত হোসেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট থানাধীন নীলকমল ২নম্বর ওয়ার্ডে  বাসিন্দা মৃত জাফরের ছেলে।
সরজমিনে বুধবার নিহত হোসেনের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র কর্মক্ষম ছেলেকে হারিয়ে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন মা রিনা বেগম। শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে তার স্ত্রী হাসনুর বেগম চুপচাপ বসে আছেন ঘরের এক কোনে। বাবাকে হারিয়ে আর্তনাদ থামছে না দুই মেয়ে ও স্বজন-প্রেিবশীদের।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুই কন্যা সন্তান মা ও স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার মোহাম্মদ এলাকার লাউতলা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করত। পরিবারে আয়-রোজগার করার মতো হোসেন ছাড়া তাদের আর কেউ নেই। হোসেনের মৃত্যুতে দুই মেয়ে সন্তান আকলিমা (৫) ও সিমা (৩) তাদের ভবিষ্যাত এখন অনিশ্চিত।
সরকার যেনো এই অস্বচ্ছল পরিবারকে সহযোগিতা করে পাশে থাকে একটাই দাবী পরিবার ও এলাবাসীর।
নীলকমল ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন লিখন জানান, নিহত হোসেন পরিবারটি একটি হত-দরিদ্র পরিবার। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে যেকোন সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
দুলাহাট থানার ওসি মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন,আমি নিহতের ঘটনা শুনছি। থানায় কোন অভিযোগ করেনি। তাদের কোন তথ্য উপাথ্য আমাদের কাছে নেই।
এছাড়াও ঢাকাতে শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান কিশোর সিয়াম (১৫), যুবক মো. হাছনাইন আহম্মেদ (২৬)। কিশোর বাহাদুর হোসেন মনির (১৬), কিশোর সোহাগ (১৫)
ছবিঃ
সংযুক্ত চরফ্যাশনে নীলকমল ২নং ওয়ার্ডে নিহত হোসেন এর -মা রিনা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২২:১৬:৩১ ● ৬৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ