কাউখালী(পিরোজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পিরোজপুরে কাউখালী উপজেলার সুবিদপুর গ্রামে ঘূর্ণিঝড়ের ত্রাণ বিতরণের কার্ড নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তি হচ্ছেন আব্দুর রব হাওলাদার এবং এ ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। আব্দুর রব পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রি এবং স্থানীয় নিলতি গ্রামের মৃত মকবুল হওলাদারের ছেলে। গ্রেফতারকৃতরা হলো একই এলাকার উত্তর নিলতি গ্রামের সুভাষ ঘোষের ছেলে সঞ্জীব ঘোষ ও কমল চন্দ্র পাটিকরের ছেলে দিলীপ পাটিকর। আহতরা হচ্ছেন নিলতি গ্রামের মকবুল হাওলাদারের ছেলে ও নিহত ব্যক্তির ভাই মুজিবুর হাওলাদার (৫৫) ও মো. সেলিম (৪০), সেলিম হাওলাদারের ছেলে আশিক হাওলাদার, সুভাষ ঘোষের ছেলে সঞ্জীব ঘোষ ও সঞ্জয় ঘোষ (৪০), মকবুল হাওলাদারের ছেলে আলিম হাওলাদার (৪৪), মুজিবুর হাওলাদারের ছেলে লিমন হাওলাদার, আব্দুল হাই সরদারের ছেলে সোলায়মান হাওলাদার।
স্থানীয় চিড়াপাড়া-পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের(৪.৫.৬) নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য খাদিজা বেগমের দেবর আব্দুর রব গতকাল রবিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। অন্যদিকে পুলিশ আরও জানায়, কাউখালী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সঞ্জীব ঘোষ ও দিলীপ পাটিকরকে গতকাল রবিবার গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালে বিধ্বস্তদের মাঝে সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মাধ্যমে উক্ত গ্রামে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। মহিলা ইউপি সদস্য খাদিজা এই ত্রাণ তার সমর্থক ও আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বিতরন করেছেন এই অভিযোগে গত শনিবার ঘূর্ণিঝড় দুর্গতরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং উক্ত ইউনিয়নে সুবিদপুর পাটিকর পাড়ার একটি রাস্তার উপর সন্ধ্যার পরে জড়ো হন। এই খবরে খাদিজার আত্মীয়-স্বজন এক হয়ে বিক্ষুব্ধদের উপর হামলা করলে লাঠি-সোটা সজ্জিত উভয় পক্ষের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে এবং ১০-১২জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে কাউখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে খাদিজার দেবর আব্দুর রবের অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হলে গতকাল রবিবার দুপুরে তার মৃত্যু ঘটে। কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির এই সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা দায়ের এবং জড়িত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কাউখালীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বজল মোল্লা জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং নিহত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলেছেন। তবে এই সংঘর্ষ বা হত্যার ঘটনাটিকে ত্রাণ বিতরণ নিয়ে ঘটেছে বলে কেউ তাকে অভিযোগ করেননি। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে তাকে স্থানীয়ভাবে জানানো হয়েছে।
আরএইচআর/এমআর