তালতলীতে রেমালে দায়িত্বে অবহেলায় প্রকৌশলীকে শোকজ!

প্রথম পাতা » বরগুনা » তালতলীতে রেমালে দায়িত্বে অবহেলায় প্রকৌশলীকে শোকজ!
বৃহস্পতিবার ● ৩০ মে ২০২৪


তালতলীতে রেমালে দায়িত্বে অবহেলায় প্রকৌশলীকে শোকজ!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরগুনার তালতলীতে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালের’ জরুরি তথ্য সংগ্রহ এবং বিতরণের জন্য কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বে থাকলেও তা পালন করেননি এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন। ফলে জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কোনো তথ্যই পায়নি সাধারণ মানুষ। দায়িত্বে অবহেলায় উপজেলা প্রকৌশলীকে শোকজ নোটিস দিয়েছেন  এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী ও বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী। নোটিশ প্রাপ্তির ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। নোটিশে তার বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে না তার কারন দর্শাতে বলা হযেছে।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এলজিইডি বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী এস, এম, হুমায়ূন কবির। এর আগে গত ২৭ মে  উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেনকে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলি আখতার হোসেন ও বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী এস, এম, হুমায়ূন কবির ঘুর্ণিঝড় রেমালে কন্টোল রুমের দায়িত্বে অবহেলায় পৃথক দুইটি শোকজ নোটিশ দেয় ।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে তালতলী  উপজেলা লন্ডভন্ড হয়ে যায়। রেমালের কারনে সরকারি সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটিও বাতিল করা হয়। ওই ঘূর্ণিঝড় রেমালের গতিবিধি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ, পূর্বাভাস ও জলোচ্ছ্বাস সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করার জন্য একটি কন্ট্রোলরুম চালু করে উপজেলা প্রশাসন। পর্যায়ক্রমে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর প্রধানকে কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত ২৬ মে রবিবার কন্টোল রুমের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন ও তার দপ্তরের  হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মাসুদ সিকদারকে।  উপজেলা প্রকৌশলীসহ তার হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মাসুদ সিকদার রবিবার রাত ১০টা পর্যন্ত অফিসেই আসেনি। কন্ট্রোল রুমে দেওয়া নম্বরে একাধিকবার তথ্য জানার জন্য ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। এতে ঘূর্ণিঝড়ের কোনো তথ্যই পায়নি সাধারণ মানুষ। উপজেলা  প্রকৌশলী কন্টোলরুমের দায়িত্ব পালন এবং  কতৃপক্ষকে অবহিত না করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে ঢাকায় ছিলেন।
এ  বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায় এবং উপজেলা প্রশাসন  এলজিইডি কতৃপক্ষের নজরে আনেন। পরে তাকে অসাদাচরণের জন্য কৈফিয়ত তলব করেন এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী। শোকজ নোটিস উল্লেখ করা হয়  উপজেলা প্রশাসনের আদেশ উপেক্ষা করে কতৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ২৬ মে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে ঢাকায় অবস্থান করেন।  কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কোনো তথ্যই পায়নি সাধারণ মানুষ। এমন কর্মকান্ডের কারনে কতৃপক্ষ  বিবৃত। ফলে প্রধান প্রকৌশলী ও বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী পৃথকভাবে তাকে শোকজ নোটিস করেন। ওই নোটিশে আরো   বলা হয়েছে আপনী  সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) অনুযায়ী অসাদাচরণের সামিল ও শস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। সাত কার্য দিবসের মধ্যে তাকে শোকজের জবাব দেয়ার নির্দশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় বিভাগীয় ব্যবস্হা নেয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করেছেন কর্তপক্ষ ।
এলজিইডি তালতলী  উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সাখাওয়াত হোসেন শোকজ নোটিশ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন,  আমার অটিজম সন্তানের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় ছিলাম। আমার অফিসের সকল স্টাফ কন্টোলরুমে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি আরো বলেন, শোকজ নোটিশের জবাব যথাযথভাবে দিবো।
এলজিইডি বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী এস, এম, হুমায়ূন কবির বলেন, প্রধান প্রকৌশলী  উপজেলা প্রকৌশলীকে শোকজ নোটিশ দিয়েছেন,  আমিও তাকে শোকজ করেছি।  পৃথক দুটি শোকজের জবাব সাত দিনের মধ্যে চাওয়া হয়েছে।  জবাব পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৫:১১ ● ৭২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ