ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
নীতিমালার শর্ত শিথিলপূর্বক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্বাধীনতা নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এসময় ফেডারেশনের সভাপতি মো. এশারত আলী এবং সাধারণ সম্পাদক মিলন কুমার ঘোষালসহ বিভিন্ন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি সত্ত্বেও নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি না হওয়ার কারণে শিক্ষকরা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এমপিওভুক্তির উদ্দেশে সরকার ইতোমধ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, তবে নীতিমালা শিথিল না হলে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হবে না। তারা বলেন, নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা আদায়ের লক্ষ্যে ১০-১৫ বছরের অধিক সময় নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম পালন করতে গিয়ে আমাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী হতাহত হয়েছেন। দাবি পূরণের জন্য বিগত শিক্ষামন্ত্রী কয়েক দফায় আশ্বাস দিয়েছিলেন এবং সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ সময়ে উদ্যোগও গ্রহণ করেছিলেন। এ বিষয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীও সংসদে বহুবার নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করার জন্য দাবি উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী, তাদের পরিবার, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সাকুল্যে প্রায় এক কোটির ওপর জনগোষ্ঠী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত এবং এখানে তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি ঝুলে থাকায় এরা সরকারের প্রতি সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। কর্মসূচিতে নন-এমপিও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবিও পেশ করা হয়। এগুলো হলো- নীতিমালার শর্ত শিথিলপূর্বক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্ত করতে হবে, এ শর্ত পূরণে সামর্থ না হলে শিক্ষক-কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ বেতন প্রদান করে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে হবে এবং যোগদানের দিন থেকে চাকরির বয়স গণনা করতে হবে। এর আগে ২০১৮ সালের জুন মাসে নন-এমপিও শিক্ষদের এমপিওভূক্ত করতে একটি নীতিমালা জারি করে সরকার। নীতিমালায় বলা হয়, ৩৫ বছরের অধিক বয়সী কেউ এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন না। পাশাপাশি শিক্ষকদের অবসরের বয়স হবে ৬০ বছর। নীতিমালায় শিক্ষকের এমপিওভুক্তির জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা, নিয়োগে স্বচ্ছতা, নিয়োগের প্রাথমিক বয়স, অবসরের বয়সসীমাসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে ইনডেক্স নম্বর বা নিবন্ধন সনদ ছাড়া কাউকে নিয়োগ দেয়া যাবে না। নিয়োগে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এ’র মেধাক্রম/মনোনয়ন/নির্বাচন বাধ্যতামূলক করা হয়। এ ছাড়া নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাজীবনে শুধু একটি তৃতীয় বিভাগ/সমমান গ্রহণযোগ্য হবে। এ নীতিমালা জারির পর কেউ যদি বকেয়া প্রাপ্য হন, সেক্ষেত্রে তা পরিশোধ করা হবে না।