আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
কক্ষ পরিস্কার করতে বিলম্ব হওয়ায় শিক্ষক হাফেজ আবু আক্কাস হেলালী মাদ্রাসা ছাত্র আরিফুল ইসলাম মাহিকে পানি ভরা বেতন দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত ছাত্র এমন অভিযোগ করেন। ওই ছাত্রকে স্বজনরা উদ্ধার করে মঙ্গলবার দুপুরে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে দারুল আরকাম মডেল মাদ্রাসায় সোমবার রাতে।
জানাগেছে, আমতলী পৌর শহরের সাকিব প্লাজার তৃতীয় তলায় হাফেজ আবু আক্কাস হেলালী ২০১৯ সালে দারুল আরকাম মডেল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফেজ আবু আক্কাস হেলালী ছাত্রদেরকে কারনে -অকারনে নির্যাতন করে আসছেন। সোমবার রাতে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র আরিফুল ইসলাম মাহিকে কক্ষ পরিস্কার করতে বলেন শিক্ষক আবু আক্কাস হেলালী। এ কক্ষ পরিস্কার করতে বিলম্ব করে ছাত্র মাহি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কোকা কোলার পানি ভরা বোতল দিয়ে মাহিকে শিক্ষক হেলালী বেধরক মারধর করে। মঙ্গলবার সকালে ওই মাদ্রাসার ছাত্রদের মাধ্যমে ছাত্র মাহির মা মাসুমা বেগম জানতে পায়। পরে ছেলেকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। শিক্ষক হেলালীর মারধরে ছাত্র মাহির মাথা, হাত ও পিঠে গুরুতর জখম হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই ছাত্রকে হাসপাতালে দেখে এসেছেন। ছাত্র মাহির বাড়ী বৈঠাকাটা গ্রামে। তার বাবার নাম শহীদুল ইসলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্র বলেন, শিক্ষক আবু আক্কাস হেলালী প্রায়ই মাদ্রাসার ছাত্রদের কারনে অকারনে লোহার রড়, পানি ভরা বোতল ও চাবি দিয়ে মারধর করে। কিন্তু আমরা ভয়ে প্রকাশ করার সাহস পাইনি। তারা আরো বলেন, মাহিকে আমাদের সামনেই মারধর করেছে।
ছাত্র আরিফুল ইসলাম মাহি অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষক আবু আক্কাস হেলালী আমাকে কক্ষ পরিস্কার করতে বলে। এতে বিলম্ব হওয়ায় আমাকে কোকা কোলার পানি ভরা বোতন দিলে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমি চিকিৎসার কথা বললে শিক্ষক হেলালী আমাকে চিকিৎসা করায়নি উল্টো মাদ্রাসায় আটকে রেখেছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
ছাত্র আরিফুল ইসলাম মাহির মা মাসুমা আক্তার বলেন, শিক্ষক আবু আক্কাস হেলালী গত রমজান মাসে আমার ছেলেকে অহেতুক বেধরক মারধর করেছে। কিন্তু ছেলে আমাকে বলেনি। গত সোমবার রাতে আবারো পানি ভরা বোতন দিয়ে বেধরক পিটিয়েছে। আমি এ ঘটনার ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবী করছি।
অভিযুক্ত শিক্ষক আবু আক্কাস হেলালী মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, মাহির মা এসে তার ছেলেকে নিয়ে গেছেন। কেন নিয়ে গেছের এমন প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন?
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ কাঙ্খিতা মন্ডল তৃণা বলেন, ওই ছাত্রের পিঠে, হাতে ও মাথায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনা জেনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর