দুমকি(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলা শহরের অদূরে জলিশা রাধাগোবিন্দ মন্দির থেকে হাবি হাওলাদারবাড়ি সড়কে দাসপাড়া খালের ওপর এলজিইডির স্লীপার ভেঙ্গে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আশপাশের অন্তত: ৩-৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক শ’ শিশু কিশোর ছাত্রছাত্রীসহ ৫ গ্রামের শ’ শ’ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু পার হয়। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৭-৮৮ সালে আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ৮ওয়ার্ডের জলিশা দাসপাড়া খালের ওপর নির্মিত সেতুটির উভয় প্রান্তের স্লীপার ভেঙ্গে ফাঁকা ফাঁকা হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পথচারিদের ডিঙ্গিয়ে ডিঙ্গিয়ে সেতুটি পার হতে হচ্ছে। তবে দাসপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জলিশা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জলিশা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ ৩/৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক শ’ শিশু কিশোর শিক্ষার্থীদের নিত্য চলাচলে দুর্ভোগ ও ফাঁকায় পড়ে হাত-পা ভাঙ্গাসহ সমুহ দুর্ঘটনার শঙ্কায় কাটাতে হচ্ছে অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর।
উপজেলা শহর থেকে মাত্র ৪কিলোমিটার দূরে ৩৫-৩৬বছর আগে এ সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটির প্রশস্ততা কম থাকায় শুরু থেকেই ভ্যান, রিস্কা, মোটরসাইকেল ব্যতিত বড় কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারেনি। এতে আশপাশের গ্রামের কৃষকদের উৎপাদিত ধান, চালসহ অন্যান্য শস্য ছোট ছোট রিকশা-ভ্যানে করে হাটবাজারে নিতে হয়। স্লীপার ভেঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটিতে অনেক আগে রিস্কা, ভ্যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র পায়ে হেটে যাতায়াতও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুটির পূর্ব প্রান্তের স্লীপার গুলো মাঝামাঝি ভেঙ্গে ফাঁকা ফাঁকা এবং দেবে কাত হয়ে বিভিন্ন অংশ ক্ষয় হয়ে ভেতরের রড বেরিয়ে গেছে। এরপরও সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসী চলাচল করছে। স্থানীয় বাসিন্দা মো: বশির উদ্দিন চৌকিদার, মো: জসিম উদ্দিন ফকির, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মোশারফ হোসেন মাষ্টার বলেন, ও সেতুটি সংস্কারাভাবে এলাবাসী দুর্ভোগের শিকার। ইতোমধ্যে ভাঙ্গা সেতুটি পারাপার করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্লীপারের ফাঁকে পড়ে গিয়ে কয়েকজন পথচারী আহত হয়েছে। শিশু শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তায় কাটাতে হয়। তাই যতদ্রুত সম্ভব স্লীপার সেতুটি সংস্কার কিম্বা ওই স্থানে পাকা সেতু নির্মাণ করা দরকার।
আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ গোলাম মর্তুজা বলেন, জেলেপাড়া, দাসপাড়া, জলিশাসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এই সেতু দিয়ে উপজেলা শহরে যাতায়াত করে থাকেন। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এসব গ্রামের শত শত মানুষ বিপাকে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির সংস্কার কিম্বা নতুন সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের। এ নিয়ে উপজেলায় একাধিক মাসিক উন্নয়ন সভায় আলোচনা হয়েছে। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে নতুন সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। তবে মানুষের চলাচল নির্বিঘœ করতে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে স্লীপার তৈরীর অর্ডার দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুতই স্লীপার গুলো এনে সেতুটি সংস্কার করে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো: জগলুল হাসান ফারুক বলেন, ‘অর্থ বরাদ্দ পেলে নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।’
এমআর