বাউফল (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বাউফলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে জাটকা ইলিশ রক্ষায় তেঁতুলিয়া নদীতে অভিযান চলাকালে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের ট্রলারে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে অর্ধশতাধিক দুর্বৃত্ত। হামলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ ছয় জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর জখম দুই জনকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। জীবন রক্ষায় অভিযানের সাথে থাকা নৌ পুলিশ এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে অভিযানস্থল ত্যাগ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন, তেঁতুলিয়া নদীকে ইলিশের অভয়াশ্রম গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা ইলিশ শিকার এবং সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিক্রি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এক শ্রেণির অসাধু জেলে রাতের আঁধারে জাটকা ইলিশ শিকার করে যাচ্ছে। জাটকা ইলিশ শিকার বন্ধে সোমবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দের নেতৃত্বে ১১ জনের একটি দল ট্রলারযোগে তেঁতুলিয়া নদীতে অভিযানে নামে। অভিযানের দলটি রাত আটটার দিকে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরওয়াডেল এলাকার খানকায়ে এলাকায় গিয়ে অনেক জেলেদের অবৈধভাবে জাটকা ইলিশ শিকার করতে দেখেন। জেলেরা প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে নৌকা ও জাল ফেলে পালিয়ে যায়। এসময় অভিযানের দলটি নদী থেকে বিপুল পরিমান কারেন্ট জাল ও বাঁধা জাল জব্দ করে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ৫০-৬০ জনের একটি সংখবদ্ধ দল অতর্কিত লাঠিসোঁট ও ইটপাটকেল নিয়ে অভিযান দলের ট্রলারে হামলা চালায় এবং বৃষ্টির মত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে ইউএনও পিজুস চন্দ্র দে,ভূমি কার্যালয়ের জারিকারক মো. আশরাফ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. আবদুল্লাহ, মৎস্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন এবং পুলিশসহ ছয়জন গুরুতর আহত হন। একপর্যায়ে জীবন বাঁচাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে থাকা কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে নিজেদের রক্ষা করেন। অভিযান দলটি অভিযান বাতিল করে গুরুতর আহত আশরাফ ও আবদুল্লাহকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করান।
কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান, লোভি জেলেদের আক্রমণ থেকে জীবন বাঁচাতে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করা হয়েছে। দুর্বত্তদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হঠাৎ আক্রমনে খুবই ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় রক্ষা পেয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে। এঘটনায় অভিযানে কোন ব্যতয় ঘটবে না। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মৎস্য অধিদপ্তর তেঁতুলিয়া নদীকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে। এ কারণে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তেঁতুলিযা নদীতে জাটকা শিকার রোধে অভিযান চালানো হচ্ছে। বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়া চরছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।