আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আমতলী পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৯মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রতিক না দেয়ার ঘোষনায় মহাখুশি তৃণমুল নেতা-কর্মীরা। এখন আর দলীয় মনোনয়ন পেতে আওয়ামীলীগ নেতাদের মধ্যে যুদ্ধ নেই। আওয়ামীলীগ নেতারা এখন ব্যস্ত সাধারণ ভোটারদের সমর্থণ আদায়ে। সাধারণ ভোটাররাও এ ঘোষনায় বেশ খুশি। তারা এখন তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট যুদ্ধে সহযোগীতা করছে। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমতলী পৌরশহরে সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। চায়ের দোকান, হোটেল ও রেস্তোরাসহ সর্বত্র চলছে পছন্দের প্রার্থীদের সমর্থণে আলোচনা-সমালোচনা।
জানাগেছে, নির্বাচনের তফসিল অনুসারে আগামী ৯মার্চ আমতলী পৌরসভা নির্বাচন। এ নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ১৩ফেব্রুয়ারী। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা প্রভাত থেকে শুরু করে রাতভর গণসংযোগ করছেন। দলীয় প্রতিক না থাকায় আওয়ামীলীগ-বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। এতে মহাখুশি কমী-সমর্থকরা। এ নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগের চারজন এবং বিএনপির একজন প্রার্থী গণসংযোগ করছেন। আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বর্তমান মেয়র মতিয়ার রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান নান্নু, উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি গাজী সামসুল হক, বরগুনা জেলা যুবলীগ সহ-সভাপতি এলমান আহম্মেদ সুহাদ তালুকদার এবং উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তুহিন মৃধা গণসংযোগ করছেন। মতিয়ার রহমান ২০১০ সালে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমতলী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন।এরপর ২০১৯ সালে আওয়ামীলীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় পুনরায় মেয়র হন। গত ১৩ বছর ধরে তিনি পৌর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। দুই মেয়াদে মেয়র হয়েও তিনি পৌর শহরের তেমন উন্নয়ন তো করেনইনি, উল্টো গড়ে তুলেছেন দুনীর্তিও মহাকাব্য। ওই দুনীর্তির অর্থেই গড়ে তুলেছেন তার নিবাস কথিত তাজমহল এমন অভিমত সাধারণ ভোটারদের। তিনি পৌরশহর উন্নয়নের নামে কাগজে কলমে বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার কর্মরত কর্মচারীরা। এছাড়াও তিনি স্বজণপ্রীতি, দলীয় করণ, কিশোর গ্যাং লালন-পালন ও নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছেন বলে অভিযোগ করেন সাবেক কাউন্সিলর মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন। এতে তার বিরুদ্ধে সাধারণ ভোটাররা ক্ষুব্ধ। সাবেক মেয়র নাজমুল আহসান নান্নুর বিরুদ্ধে তেমন কোন অভিযোগ নেই। কিন্তু বশির গাজী হত্যা মামলা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে কিন্তু ওই মামলায় তিনি অব্যহতি পেয়েছেন। তবে বেশীর ভাগ ভোটারদের কাছে তিনি ক্লিণ ইমেজের নেতা হিসেবে পরিচিত। গাজী সামসুল হকের বিরুদ্ধেও তেমন কোন অভিযোগ নেই। তবে তিনি ২০১০সালে আওয়ামীলীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়েও বর্তমান মেয়র মতিয়ার রহমানের কাছে হেরে যান। এ নিয়ে সাধারণ ভোটাররা দ্বিধা-দ্বন্ধে। এলমান আহম্মেদ সুহাদ তালুকদার একেবারেই নবীন। তবে তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ নিজাম উদ্দিন তালুকদার সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠাবান সাংসদ ছিলেন। সাংসদ বাবার ওই ইমেজ কাজে লাগিয়ে তিনি সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে যেতে যান। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তুহিন মৃধার বাবা মরহুম আব্দুস ছাত্তার মৃধা আমতলী পৌরসভার প্রথম মেয়র ছিলেন। তিনিও ভালো মেয়র হিসেবে ভোটারদের কাছে পরিচিতি পান। তার মরহুম মেয়র বাবার ইমেজ কাজে খাটিয়ে তুহিন মৃধা ২০১০সালে মেয়র পদে নির্বাচন করে সম্মান জনক ভোট পেয়েছিলেন। বাবার ইমেজ এবং দলের নেতাকর্মীদের কাজে লাগিয়ে তিনি এ নির্বাচনে অংশ নিতে গণসংযোগ করছেন। তার বিরুদ্ধে গাড়ী পোড়ানোসহ একাধিক রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। এতে তিনি গণ সংযোগে বেকায়দায় রয়েছেন। তবে তিনি দলের সিধান্তের বাহিওে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে নারাজ।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তুহিন মৃধা বলেন, রাজনৈতিক মামলা নিয়ে গোপনে গণসংযোগ করছি। তবে দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে কিছুই করবোনা।
সাবেক পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান নান্নু বলেন, ভোটারদের সমর্থণ পেতে রাতভর গণসংযোগ করছি। দুর্নীতি, স্বজণ প্রীতির বিরুদ্ধে এবং পরিবর্তনের পক্ষে ভোটাররা এবার রায় দিবে।
সামসুল হক গাজী বলেন, জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে নির্বাচনে অংশ নেব এবং ভোটারদের সমর্থণ পেতে কাজ করছি।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। সামনে নির্বাচন বিধায় একটি মহল আমার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছে।
এমএইচকে/এমআর