আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
অষ্টম শ্রেণীতে পড়–য়া স্কুলছাত্রী মেয়েকে উত্যাক্তের প্রতিবাদ করায় মা-বাবাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে বখাটে জাহিদ মোল্লা ও তার স্বজনরা লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত স্কুলছাত্রীর বাবা-মা ও চাচাতো ভাই রিমনকে স্বজনরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে বুধবার রাতে আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে। এ ঘটনায় মেয়ের মা বৃহস্পতিবার আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানাগেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে গত এক বছর ধরে বখাটে জাহিদ মোল্লা উত্যাক্ত করে আসছে। গত তিন মাস আগে ওই স্কুলছাত্রীকে বখাটে জাহিদ মোল্লা বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে যায় এমন দাবী ছাত্রীর বাবার। স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল খাঁনের সহযোগীতায় ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে তার বাবার হাতে তুলে দেন। গত বুধবার সকাল ৯ টার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে ওইছাত্রীকে বখাটে জাহিদ মোল্লা পুনরায় উত্যাক্ত করে বলে জানান স্কুলছাত্রী। খবর পেয়ে ছাত্রীর বাবা এ ঘটনার প্রতিবাদ করে জাহিদকে মারধর করে বলে দাবী করেন ছেলের খালু স্বজল আকন। এ ঘটনার জেরধরে ওইদিন রাতে মেয়ের বাবা ও অস্তঃস্বত্তা মাকে শালিস বৈঠকের কথা বলে বখাটে জাহিদ মোল্লার খালু স্বজল আকন ডেকে নেয়। পরে স্বজল আকন, ছালাম আকন, সাইফুল মোল্লা ও বখাটে জাহিদ মোল্লা তাদের লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। তাদের মারধরে মেয়ের বাবা বিবস্ত্র হয়ে গেলেও তারা তাকে মারধরে নিবৃত হয়নি। এ সময় তাদের রক্ষায় মেয়ের চাচাতো ভাই রিমনএগিয়ে আসলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে। এতে তাদের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে ওইদিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বৃহস্পতিবার আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার পর বখাটে জাহিদ মোল্লা পলাতক রয়েছে।
স্কুলছাত্রীর বাবার বাড়ী ঢাকার সাভার থানার বাজারশোন এলাকায়। গত দুইবছর আগে তিনি আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে জমি কিনে বাড়ীঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন।
স্কুলছাত্রীর আহত বাবা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে বখাটে জাহিদ মোল্লা স্কুলে আসা- যাওয়ার পথে উত্যাক্ত কওে আসছে। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমাকে, আমার দুই মাসের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তিনি আরো বলেন, স্বজল আকন ও ছেলের বাবা সাইফুল মোল্লা আমাকে পিটিয়ে বিবস্ত্র করে। আমি তাদের হাতে পায়ে ধরেও রক্ষা পাইনি। আমার বাড়ী এ এলাকায় না হওয়ায় তারা আমাকে বেশ নির্যাতন করছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
বখাটে জাহিদ মোল্লার খালু স্বজল আকন স্কুলছাত্রীকে তার ভায়রার ছেলের উত্যাক্তের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার ভায়রার ছেলেকে মেয়ের বাবা মারধর করেছে। তাই আমি শালিস বৈঠকে বসার কথা বলে তাদের ডেকে এনেছি। কিন্তু তিনি আমার ওপরে হামলা করেছে।
বখাটে জাহিদ মোল্লার বাবা সাইফুল মোল্লার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরিচয় জেনে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মুনয়েম সাদ বলেন, আহত স্কুলছাত্রীর বাবার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহৃ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, তাকে তার ভাইকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএইচকে/এমআর