দুমকি (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই পটুয়াখালীর দুমকিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ডামাডোল বাজতে শুরু করেছে। চলতি মাসের শেষ বা ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে তপসিল ঘোষনার আভাসে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় নির্বাচনী আলোচনায় সরব হয়ে ওঠেছে সাধারণ মানুষ। প্রত্যন্ত এলাকায় সাধারন মানুষের আলোচনায় ক্ষমতাসীন আ’লীগের অন্তত: হাফ ডজন প্রার্থীর নাম এসেছে।
এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগ থেকে অন্তত: হাফ ডজন প্রার্থী মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাযায়। এসব প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এড. হারুন অর রশিদ হাওলাদার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান সিকদার ছাড়াও আর যাদের নাম আলোচনায় এসেছে তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও আঙ্গারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ গোলাম মর্তুজা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও মুরাদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সিকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এড. মেহেদী হাসান মিজান, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস নাসিমা বেগম। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান আকন সেলিম, এড. হুমায়ুন কবির বাদশা, উপজেলা আ’লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো: দেলোয়ার হোসেন মোল্লা, আ’লীগ নেতা মো: আবুল বাশার, মহিলা আ’লীগের সভাপতি ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন, মহিলা আ’লীগ নেত্রী নাজমুন নাহার শিরিণ, নারী পরিষদ নেত্রী তাহেরা আলী রুমা ও মিসেস নাসিমা সিকদার প্রার্থী হতে পারেন। বিএনপি’র প্রার্থীতার ক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আসা না আসার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল বলে জানান সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
এদিকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বেশীর ভাগই দলগত সিদ্ধান্তের আশায় ইতোমধ্যে দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন। উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী প্রকাশ্য ও গোপনে তাদের সাথে যোগাযোগ, দেশে-বিদেশে ফ্রি ট্যুর, চিকিৎসার নামে ভারতের চেন্নাই, ভেলর, কোলকাতায় স্বস্ত্রীক প্রমোদ ভ্রমণ করে সম্পর্ক মজবুত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কেউ কেউ মনোনয়ন প্রতাশায় তাদের নিজস্ব গাড়ী ব্যবহারের অবাধ সুযোগ দেয়ার পাশাপাশি নানা উপঢৌকন দিয়ে সমর্থণ ও সুপারিশ অর্জনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি এলাকার হাট, বাজার, বাসস্ট্যান্ডে এসব প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি ও আগাম প্রচারণায় সাধারন ভোটারদের উজ্জিবিত করছে। আবার কেউ কেউ উপজেলা শহর ও আশ-পাশের জনবহুল এলাকায় সড়কের দু’পাশে নিজের ছবিসম্বলিত রং বে-রংয়ের ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে পরিচিতি ও সমর্থন আদায়ে তৎপড় রয়েছেন। সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে পূঁজি করেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা উপজেলার সর্বত্র দলীয় নেতা-কর্মীদের খোঁজ-খবর নেয়াসহ নানা ভাবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এসব সম্ভাব্য প্রার্থীদের শহর, বন্দর, গ্রাম্য হাটবাজার ও বাসস্ট্যান্ডসহ জনসমাগম স্থলে সরব উপস্থিতিতে সাধারন ভোটারদের মাঝেও নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এড. হারুন অর রশিদ হাওলাদার সম্প্রতি উপজেলার সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে সভা ডেকে নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করে আকুন্ঠ সমর্থণ দাবি করেছেন। তিনি ও সভায় বলেন, দলীয় মনোয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে বিগত ৫টি বছর উপজেলার সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশে থেকে আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করার নিরলস চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। আগামীতেও মনোনয়ন চাইবেন। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সমর্থণ ও সর্বশেষ জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে নৌকা মার্কার মনোনয়ন পাওয়ার জন্য তিনি আশাবাদী। তিনি আরও বলেন, আওয়ামীলীগ একটি গণতান্ত্রিক বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এখানে অনেক প্রার্থী আছেন, যারা দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন। মনোনয়নের এখতিয়ার কেবল মাত্র দলীয় সভানেত্রী শেখ জননেত্রী হাসিনার হাতে। তিনি যাকে মনোনয়ন দেবেন কেবল মাত্র তিনি হবেন দলীয় মার্কা নৌকার প্রার্থী। মনোনয়ন দৌড়ে তিনি সবার থেকে এগিয়ে আছেন বলেও দাবী করেন তিনি।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান সিকদার বলেন, জনগনের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি, জনগনের প্রত্যাশা পূরণে ফের নির্বাচনে নামার ইচ্ছা ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন তিনি। দুমকি উপজেলা আ’লীগের সহসভাপতি মিজানুর রহমান সিকদার বলেন, দীর্ঘদিনের একজন পরিক্ষীত কর্মী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন চাইবো। কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে নৌকার মনোনয়ন দেবেন আমি তাকে সমর্থণ দিয়ে নৌকাকে জয়ী করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।
এ প্রসঙ্গে দুমকি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: আবুল কালাম আজাদ বলেন, নেতা-কর্মীদের মধ্যে যে কেউই দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন। এতে দোষের কিছু নেই। আমরা তৃণমূলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩জনের প্যানেল জেলার মাধ্যমে কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেব। চুড়ান্ত মনোনয়ন দেবেন দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় মনোনয়ন যিনি পাবেন, আমরা সবাই তার পক্ষে নৌকা মার্কার নির্বাচন করবো।
এমআর