কুয়াকাটায় লাইফ জ্যাকেট বিহীন ফাইবার বোটে ঝুঁকিতে পর্যটকের জীবন!
প্রথম পাতা »
কুয়াকাটা »
কুয়াকাটায় লাইফ জ্যাকেট বিহীন ফাইবার বোটে ঝুঁকিতে পর্যটকের জীবন!
বুধবার ● ৩ জানুয়ারী ২০২৪
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
না আছে রুট পারমিট, না আছে কোন ধরনের ফিটনেস। তারপরও পর্যটক বোঝাই করে সাগরে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। যেন দেখার কেউ নেই। ফলে যা হবার তাই ঘটল। এমন একটি পুরনো ফাইবার বোট কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ১৬ জন পর্যটক নিয়ে ডুবির ঘটনা ঘটল। যদিও সবাই প্রাণে বেচে গেছেন। কুয়াকাটা থেকে ফাতরার বনাঞ্চলে গিয়ে ফেরার পথে শনিবার দুপুরে এই ডুবির ঘটনা ঘটেছে। প্রাণে বেচে যাওয়া পর্যটক রাজিব ফরাজি জানানন, পুরনো ফাইবার বোটটিতে কোন লাইফ জ্যাকেট ছিল না। ফাতরার লেকের মধ্যে দ্রুতগতিতে চলা বোটটি স্লো না করে ঘোরানোর সময় কাত হয়ে বোটটি ডুবতে থাকে। একটি জেলে নৌকা ও বনবিভাগের লেঅকজনের সহায়তায় সবাই কিনারে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। এরা মোট ১৬ জন ছিলেন। গাজীপুর থেকে কুয়াকাটায় ভ্রমনে এসে তারা মরণ ঝুকিতে পড়েছিলেন বলে জানান। তারা জনপ্রতি তিনশ’ টাকা ভাড়ায় ফাতড়ার বনাঞ্চল দেখতে গিয়েছিলেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশসহ কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির নাকের ডগায় জীর্ণদশার এমনসব ফাইবার বোটে পর্যটক বোঝাই করে সাগরে চলাচল করছে। পর্যটকরা বাধ্য হয়ে এসব বোটে চলাচল করছেন। তারা ফাতরার বনাঞ্চল ছাড়াও এসব বোটে ঝুঁকি নিয়ে চরবিজয় ভ্রমণে যাচ্ছেন। এদের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। জীর্ণদশার বোটসহ সকল বোট একটার পর একটা সিরিয়াল অনুসারে ছেড়ে যায় বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে। পর্যটকরা ইচ্ছে করলে তাদের পছন্দসই বোটে চলাচল করতে পারছেন না। কোন সাইজের বোটে কতজন পর্যটক চলাচল করবেন তা বোট চালক কিংবা মালিকদের কোন নির্দেশনা নেই। ফলে যে যত বেশি পারছে পর্যটক বোঝাই করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে। আর লাইফ বয়া কিংবা লাইফ জ্যাকেট কোনটাই অনেক বোটে নেই। যেন ফ্রি-স্টাইল সিস্টেমে পর্যটকদেও কাছ থেকে টাকা নিয়ে এসব বোটে চলাচল বাধ্য করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনটার কবলে পড়া বোটের মালিখ মো: রুবেল জানান, চালু অবস্থায় বোটটি ঘোরানোর সময় একজন ট্যুরিস্ট ছাদে ওঠায় তিনি পড়ে যান। সামান্য পায়ে ব্যাথা পেয়েছেন। আর কিছু নয়। লেকের পাড়ের বনে বানর দেখে তিনি ছাদে উঠেছিলেন। এসময় বোটটি কাত হলে সকল গেস্ট এক পাশে গেলে জানালা দিয়ে একটু পানি উঠছিল। ডুবেনি। ওনার চিকিৎসা করানো হয়েছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সভাপতি জনি আলমগীর জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। বোটগুলো যাতে সুষ্ঠু ম্যানেজমেন্ট করা যায় এজন্য একটি তদারকি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখানে মোট ২৬টি বোট ট্যুরিস্ট নিয়ে বিভিন্ন স্পটে ভ্রমনে যায়। লাইফ জ্যাকেট রাখা এবং ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো: জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। নিয়ম মাফিক লাইফ বয়া এবং লাইফ জ্যাকেট ছাড়া কেউ বোট পরিচালনা করতে পারবে না। তবে পর্যটকদেও দাবি বোট মালিকদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিলে পর্যটকরা তাঁদের পছন্দসই এবং যে বোটটি নিরাপদ মনে করবেন ওই বোটে ভ্রমণ করবেন। তাইলে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত থাকবে।
এমইউএম/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৩:৪৪ ●
৩২৯ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)