ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
তামাকজনিত রোগের পেছনে প্রতিবছর সরকারের চিকিৎসা সেবায় ব্যয় হয় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ড. রুমানা হক।
সোমবার (১১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের আয়োজিত ‘তামাকের স্বাস্থ্য ক্ষতি রোধে তামাক করনীতি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক রুমানা হক বলেন, দেশে ক্যান্সারের ভয়াল থাবার আক্রামণের শিকার হচ্ছেন দরিদ্ররা। অনেকেই তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা করতে যেয়ে বাড়ি-ভিটা বিক্রি করে দেন। আবার সরকার তামাক থেকে বছরে ২৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে। এর বিপরীতে তামাকজনিত রোগের পেছনে সরকারের চিকিৎসা সেবায় ব্যয় হয় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। তাই এমনভাবে তামাকে কর বাড়াতে হবে, যেনো তা ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এটা করতে পারলে ভবিষৎ প্রজন্মকে একটি স্বাস্থ্যসম্মত জাঁতি হিসেবে গড়ে তোলা যাবে।
দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, আমাদের দেশে একটি ডিম কিনতে গেলে ১০ টাকা লাগে। অথচ ছয় টাকায় একটি সিগারেট পাওয়া যায়। দুই টাকায় একটি গুল পাওয়া যায় তাহলে ডিম খাবে কেনো? তারা সস্তাদরে সিগারেট কিনে খাবে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে তামাকের ওপরে উচ্চহারে কর আরোপ করা হোক। বর্তমানে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও তেলের দাম বাড়লে প্রতিবাদ করা হয়। কিন্তু সিগারেটের দাম বাড়ানোর কথা বলা হলে অনেকেই বলে থামেন কাজ হবে না। তারা বিনা পয়সায় কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন করে। ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক বলেন, আমাদের দেশে বিড়ি সেবন কমলেও প্রতিনিয়ত বাড়ছে সিগারেট ধুমপায়ীর সংখ্যা। বিদেশি তামাক কোম্পানি দেশে ঢুকতে চায়। হোটেলগুলোতে সিগারেট জোন করা হচ্ছে। সরকারের উচিত এখনই তামাকজাত পণ্য নিয়ন্ত্রণ করা। এজন্য পণ্যের দাম বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে করের হারও বাড়াতে হবে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, আজ তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার সব জায়গায় দেখা যায়। বিয়েবাড়িতে জর্দ্দাপান দিয়ে নাস্তা করানো হয় অথচ এর ক্ষতির দিক কিন্তু আমরা বুঝি না। আমরা চাই আমাদের সন্তান ভালো থাক, স্বাস্থ্যবান হউক। এজন্য সব ধরনের তামাক পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর বসাতে হবে। যাতে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০৪০ সালে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন হেলথ রিপোর্টার ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এফএন/এমআর