আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা-১ (আমতলী-তালতলী-বরগুনা সদর) আসন থেকে আওয়ামীলীগ মনোনীত, আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী ও জাতীয় পার্টিসহ নাম সর্বস্ব দলের ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে ৬ প্রার্থী নাম লেখাতেই এমপি প্রার্থী হয়েছেন এমন দাবী সাধারণ ভোটারদের। এ ৬ প্রার্থীকে ৯৯ ভাগ ভোটার চিনেন না। শুধুমাত্র নিজেদের নাম জাহির করতেই তারা নাম সর্বস্ব দলের মনোনয়ন এনে এমপি প্রার্থী হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত এরা প্রার্থী থাকলে তাদের জামানত হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।
জানাগেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গত বৃহস্পতিবার বরগুনা-১ (আমতলী-তালতলী-বরগুনা সদর) আসন থেকে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগ জেষ্ঠ্য যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু, সাবেক জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য আমতলী উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান, কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমান, জাতীয় পার্টি তালতলী উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ খলিলুর রহমান, জাকের পার্টির জাহাঙ্গির কবির, এনপিপি পার্টির মাহবুবুর রহমান, বিএনএম পার্টির মাসুদ কামাল, তৃণমুল বিএনপির ইউনুস সোহাগ, তরিকত ফেডারেশনের শাহ মোঃ আবুল কামাল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক কাষ্টম কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এদের মধ্যে আওয়ামীলীগ প্রার্থী শম্ভুকে ঠেকাতে দলের তিন হেভিওয়েট প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকু, গোলাম সরোয়ার ফোরকান ও খলিলুর রহমান প্রার্থী হয়েছেন। অপর ৫ জন প্রার্থী জাহাঙ্গির কবির, মাহবুবুর রহমান, মাসুদ কামাল, ইউনুস সোহাগ ও শাহ মোঃ আবুল কামাল নাম সর্বস্ব দলের মনোনয়ন নিয়ে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নাম লেখাতেই এমপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। এ ৬ প্রার্থীর নেই কর্মী ও সমর্থক। বরগুনা-১ আসনে ৪ লক্ষ ৮৩ হাজার ৯১১ জন ভোটারের মধ্যে ৯৯ ভাগ ভোটার তাদের চেনেন না এবং জানেন না বলে দাবী করেন সাধারণ ভোটাররা। অনেক ভোটার তাদের নামই শোনেননি।
চাওড়া কাউনিয়া গ্রামের ভোটার নজরুল ইসলাম বলেন, কোনদিনই এ ছয় প্রার্থীর নাম শুনিনি। আপনার কাছেই শুনলাম। এরাতো শুধু নিজেদের নাম জাহির করতেই প্রার্থী হয়েছেন। এদের রাজনৈতিক কোন ব্যকগ্রাউন্ড নেই।
গাবতলী গ্রামের ছত্তার নামের এক ভোটার বলেন, কর্মীবিহীন একলা নেতার দলের প্রার্থী এরা।
দক্ষিণ তক্তবুনিয়া গ্রামের ভোটার শিবলী শরীফ বলেন, আওয়ামীলীগ প্রার্থী অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী গোলাম সরোয়ার ফোরকান ও গোলাম সরোয়ার টুকু এই তিন প্রার্থী ছাড়া কাউকেই চিনিনা ও জানিনা।
বিএনএম পার্টির মেেনানীত প্রার্থী মাসুদ কামাল বলেন, নতুন নিবন্ধন দল হিসেবে মানুষ চিনেনা এটা ঠিক কিন্তু আস্তে আস্তে চিনে যাবে॥
তরিকত ফেডারেশন পার্টির মনোনীত প্রার্থী শাহ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভোটাররা আমাকে না চিনলেও তরিকতের লোকজন আমাকে চিনে। ওই ভরসায়ই প্রার্থী হয়েছি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বরগুনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. গোলাম মোস্তফা বলেন, বেশ কয়েকজন প্রার্থী নাম সর্বস্ব দলের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এদের নিয়ে জনগনের কোন ভাবনা নেই, জনগন এদের চিনেন না। তিনি আরো বলেন, এ নাম সর্বস্ব দলের প্রার্থীদের দলীয় কার্যালয় নেই, সাইন বোর্ড নেই, সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই ও কমিটি নেই। এরা শুধু নাম জাহির করতেই প্রার্থী হয়েছেন।
এমএইচকে/এমআর