আমতলীতে স্ত্রীকে মেরে স্বামীর কীটনাশক পান!
প্রথম পাতা »
বরগুনা »
আমতলীতে স্ত্রীকে মেরে স্বামীর কীটনাশক পান!
আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
স্ত্রী অনিমা রানীকে মারধরে করে মৃত্যু ভেবে কীটনাশক খাইয়ে দেয় স্বামী রিগান মজুমদার (৩৫) এবং নিজেও ওই কীটনাশক পান করে। পরে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। ওই হাসপাতালের নেয়ার পরপরই স্ত্রী অনিমা রানী মারা যায়। মৃত্যু অনিমা রানীর ভাই দীলিপ কুমার হাওলাদারের অভিযোগ তার বোন অনিমা রানীকে ভগ্নিপতি রিগান মজুমদার মারধর করে মুত্যৃ ভেবে কীটনাশক খাইয়ে দিয়েছেন। পরে নিজেকে রক্ষায় কীটনাশক খাওয়ার অভিনয় করেছেন। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামে শনিবার দুপুরে।
জানাগেছে, উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের স্বামী রিগান মজুমদার ও স্ত্রী অনিমা রানী শনিবার সকালে বরজে কাজ শেষে ঘরে এসে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। ওই সময় রিগান মজুমদার বড় ছেলে হৃদয়কে বরজে কোদাল আনতে পাঠিয়ে দেয়। এ সুযোগে স্ত্রী অনিমা রানীকে তিনি বেধরক মারধর করে। এতে স্ত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। স্ত্রীকে মৃত্যু ভেবে বরজে দেয়া কীটনাশক তাকে খাইয়ে দেয় এবং তিনিও ওই কীটনাশক পান করেন। ছেলে হৃদয় ঘরে এসে বাবা-মায়ের এ অবস্থা দেখে ডাক চিৎকার দেয়। পরে লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ তাওহিদুল ইসলাম তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। এ হাসপাতালে আনার পুর্বেই স্ত্রী অনিমা রানীর মৃত্যু হয়। মৃত্যু অনিমা রানীর ভাই দীলিপ কুমার হাওলাদারের অভিযোগ ভগ্নিপতি রিগান মজুমদার তার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে কীটনাশক খাইয়ে দিয়েছেন এবং নিজের কীটনাশক খাওয়ার অভিনয় করেছে। তিনি আরো অভিযোগ করেন, বিয়ের ১৬ বছরে আমার বোনকে ভগ্নিপতি বেশ কয়েকবার হত্যার পদক্ষেপ নিয়েছে কিন্তু সফল হয়নি। এবার তিনি সফল হয়েছেন। ২০০৭ সালে অনিমা রানীর সঙ্গে রিগান মহুমদারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন্ অযুহাতে অনিমা রানীকে স্বামী রিগান মজুমদার নির্যাতন করে আসছে বলে জানান স্থানীয়রা। স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে ২০১৮ সালে অনিমা রানী স্বামীর রিগানের বিরুদ্ধে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি মাসখানে জেল হাজতে ছিলেন। পরে স্ত্রী অনিমা রানীতে নির্যাতন করবে না বলে আদালতে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া যান। কিন্তু আদালতে মুচলেকা দিয়ে স্ত্রীকে ঘরে তুলে নিলেও স্বামী রিগান তাকে প্রায়ই মারধর করতো বলে অভিযোগ করেন অষ্টম শ্রেনীতে পড়–য়া তার ছেলে হৃদয় মজুমদার।
এ বিষয়ে তাদের অষ্টম শ্রেনীতে পড়–য়া ছেলে হৃদয় মজুমদার বলেন, আমাকে বাবা বরজে কোদাল আনতে পাঠায়। এরপর বরজ থেকে এনে দেখি বাবা-মা দুইজনই কীটনাশক পান করে অসুস্থ্য অবস্থায় ঘরের মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আমি লোকজন ডেকে এনে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাই। বাবা-মা পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া করতো এবং বাবা মাকে মারধর করতো।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ হিতৌসি বলেন, অনিমা রানী নামের এক গৃহবধুকে হাসপাতালে আনার পুর্বেই মারা গেছেন।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, খবর পেয়েছি। অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৮:০১ ●
১৭০ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)