আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আমতলী উপজেলার দক্ষিণ রাওঘা নুর আলআমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য বাছাইকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছে। স্থানীয়রা আহতদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘটনা ঘটেছে বুধবার দুপুরে বিদ্যালয় মিলনায়তনে।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার দক্ষিণ রাওঘা নুর আলআমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের তফসিল গত ২৫ সেপ্টেম্বর ঘোষনা করা হয়। ওই তফসিল অনুসারে অভিভাবক সদস্য পদে ১৭ জন এবং শিক্ষক প্রতিনিধি পদে ৪ জনে প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। বুধবার ওই মনোনয়নপত্র বাছাই কার্যক্রম শুরু করেন প্রিজাইটিং অফিসার উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার মাহমুদ সেলিম। দুপুর ১২ টার দিকে বাছাই কার্যক্রম চলমান অবস্থায় অভিভাবক সদস্য প্রার্থী জিয়াউল হক গাজী তার বড় ভাই গোলাম মোস্তফা গাজীকে গালাগাল করেন। এ সময় দুই ভাই কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় জিয়াউল হক গাজী ক্ষিপ্ত হয়ে তার বড় ভাই গোলাম মোস্তাফা গাজীর ওপর গ্লাস নিক্ষেপ করেন। এতে তিনি আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্রে করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। এ সময় বিদ্যালয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভয়ে স্কুল ছেড়ে চলে যায়। আহত গোলাম মোস্তফা গাজীর অভিযোগ প্রিজাইডিং অফিসার মাহমুদ সেলিম পক্ষপাতিত্বের কারনে বিদ্যালয়ে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পক্ষের মোস্তফা গাজী (৬০), জিয়াউল হক গাজী (৪০), নিপু (৩০), মনির (২৮) ও মাসুদ খাঁন (৪০) আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
বিদ্যালয় শিক্ষার্থী ইলমা, মৌসুমী, নাফিয়া , সাইফুল, কারিম ও ইবাদ বলেন, বিদ্যালয়ে কমিটি গঠনের নির্বাচন নিয়ে মারধরের ঘটনা অত্যান্ত দুঃখজনক।এতে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। তারা আরো বলেন, মারধরের ঘটনার সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরলে ভয়ে আমরা বিদ্যালয় ছেড়ে চলে এসেছি।
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতার বড় ছেলে মোস্তফা গাজী অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার কমিটি গঠনের প্রিজাইডিং অফিসার মাহমুদ সেলিমের পক্ষপাতিত্বের কারনে বিদ্যালয়ে মারধরের ঘটেছে। তিনি আরো বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই এখানে এসেছেন।
বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোঃ সামসুল আলম বলেন, আমার সামনেই অভিভাবক সদস্য প্রার্থী জিয়াউল হক গাজী তার বড় ভাই মোস্তফা গাজীকে গ্লাস নিক্ষেপ করেছে। ফলে বিদ্যালয় মিলনায়তনে মারধরের ঘটনা ঘটে।
আমতলী উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার প্রিজাইডিং অফিসার মাহমুদ সেলিম পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাছাই কার্যক্রম চলমান অবস্থায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এতে কার্যক্রম স্থাগিত হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এলে বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ কাওসার বলেন, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি জেনেছি। বিদ্যালয়ের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এমএইচকে/এমআর