গোপালগঞ্জ সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জের মন্দিরগুলোতে শিল্পীরা রং তুলির শেষ আঁচড়ে প্রতিমার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছেন। দৃষ্টিনন্দন প্যান্ডেল নির্মান ও সজ্জিত হয়েছে মন্ডপ। ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুক্রবার শুরু হচ্ছে ৫দিন ব্যাপি দুর্গা পূজা।
এ বছর গোপালগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলায় ১হাজার ২শত ৯২টি পূজামন্ডপে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতাদের নিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উদ্যোগে প্রস্তুতি সভা শেষ হয়েছে। এতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ’সহ বিভিন্ন পূজামন্ডপ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পঞ্জিকা মতে, এ বছর দশভুজার আগমন ও গমন দুই-ই হবে ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে। আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ২১ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ২২ অক্টোবর মহাষ্টমী, ২৩ অক্টোবর মহানবমী ও ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা শহরের বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, রং তুলির টানে প্রতিমাগুলোর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছেন প্রতিমা শিল্পীরা। মজুরি নিচ্ছে সর্বনিন্ম ৩০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে চাহিদার তুলায় মজুরি কম পেলেও বাপ দাদার আদি পেশা টিকিয়ে রাখছেন তারা।
জাঁকজমকভাবে পূজা আয়োজন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন আয়োজকরা। দেবী দুর্গার সাথে লক্ষ্মী, গনেশ, কার্তিক ও সরস্বতীর পাশাপাশি ধর্মীয় দৃশ্যপট ফুটিয়ে তুলতে তৈরি করা হয়েছে অন্যান্য প্রতিমা। আলোকসজ্জ্বার পাশাপাশি প্রসাদ বিতরণেরও ব্যবস্থা আছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য স্বেচ্ছাসেবক ও সিসি ক্যামেরার আওতায় আছে মন্দিরগুলো।
জেলা প্রশাসন ও পূজা উদযাপন পরিষদ থেকে জানা গেছে, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ১২৯২টি মন্দিরে দুর্গাপুজা হবে। যা গত বছরের তুলনায় ১৫টি বেশি। এরমধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩৪০টি, কোটালীপাড়া উপজেলায় ৩২৫টি, মুকসুদপুর উপজেলায় ২৯৯টি, কাশিয়ানী উপজেলায় ২৩৪টি ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৯৪টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দূর্গা পূজা ।
প্রতিমা শিল্পী শ্রীবাস বিশ্বাস বলেন, এ বছর আমরা ১২টি প্রতিমা তৈরির কাজ করি। প্রতি প্রতিমা তৈরিতে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা মজুরী নেই। তবে এখন দ্রব্যমূল্য ও প্রতিমা তৈরির উপকরনের দাম উর্ধ্বগতির কারণে আমাদের কিছুই থাকে না। তারপরেও বাপ-দাদার আদি পেশা টিকিয়ে রাখছি।
গোপালগঞ্জ শহরের বাজার যুব সংঘের আয়োজক কমিটির সদস্য দিলীপ কুমার সাহা দীপু বলেন, এ বছর উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন হবে।
গোপালগঞ্জ সার্বজনীন কেন্দ্রিয় কালীবাড়ীর আহবায়ক সরোজ কান্তি বিশ্বাস (খোকন) বলেন, এ বছর মহা ধুমধাপমে হবে দুর্গাপূজা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আশরাফুল হক বলেন, এ বছর জেলায় ২১টি পূজামন্ডপ বৃদ্ধি পেয়েছে। মন্ডপে ভক্তদের প্রসাদ বিতরণের জন্য চাল বরাদ্দের ব্যাবস্থা আছে।
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মধন্য গর্বিত জেলা গোপালগঞ্জে উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা শেষ হবে বলে আশা করা যায়।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অসিত কুমার মল্লিক বলেন, আশা করছি গোপালগঞ্জে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এইচবি/এমআর