পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীতে তৃণমূল মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত ২৩০ টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সার্ভিস প্রোভাইডারগণ ৪ মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে এমনিতেই জীবনযাপন করা দুরূহ তার ওপর তিন মাস ধরে বেতন ভাতা না পাওয়ায় এসব সার্ভিস প্রোভাইডারগণ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
এদিকে ২০১১ সাল থেকে চালুকৃত এসব কমিউনিটি ক্লিনিক‘র সার্ভিস প্রোভাইডারগণের বেতন ভাতা একযুগেও বাড়েনি। প্রতিবছর জুলাই মাসে সরকারি-বেসরকারি চাকুরীজীবীদের পাঁচ শতাংশ হারে বেতন ভাতা বাড়লেও এসব সার্ভিস প্রোভাইডারদের ভাগ্যে এ সুবিধা জুটেনি।
কমিউনিটি ক্লিনিক সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন পটুয়াখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান জানান, জুন মাস থেকে আমাদের বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। দ্রব্যমূল্যের উচ্চবৃদ্ধির কারণে আমরা যে বেতন পাই তা দিয়ে চলতে এমনিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার ওপর তিন মাসেরও বেশি সময় বেতন না পেয়ে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছি।
তিনি আরো বলেন, শুধু এবছর নয় প্রতিবছর জুন মাস থেকে আমাদের বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে যায় এবং তিন-চার মাস পর এ বেতন ভাতা আবার চালু হয়। আমরা তৃণমূল মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করি কিন্তু আমাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন তটস্থ থাকতে হয় কিভাবে সংসার চলবে।
সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফয়সাল হোসেন জানান ২০১১ সালে আমাদের ১০,২০০ টাকা স্কেলে নিয়োগ দেয়া হয় এবং সর্বসাকুল্যে আমরা প্রতি মাসে ১৬,৭০০ টাকা বেতন ভাতা পাই। কিন্তু বিগত ১২ বছরেও আমাদের বেতন এক টাকাও বাড়েনি।
যদিও সরকারি বেসরকারি দপ্তরে কর্মরত চাকরিজীবীরা প্রতিবছরের জুলাই থেকে পাঁচ শতাংশ হারে বর্ধিত বেতন-ভাতা পান কিন্তু আমাদের ভাগ্যে সে সুযোগ জোটেনি।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া কমিউনিটি ক্লিনিক এর সার্ভিস প্রোভাইডার মাহমুদুল হক শাকিল জানান আমরা যাতে অন্যান্য সরকারি চাকুরীজীবীদের মতো সুযোগ-সুবিধা পেতে পারি সেজন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি। আমরা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিচ্ছি অথচ আমরা চাকুরীর সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা গেছে পটুয়াখালী জেলার ৮ টি উপজেলায় মোট ২৩০ কমিউনিটি ক্লিনিকে ২২৯ জন সার্ভিস প্রোভাইডার কর্মরত আছেন ,এদের মধ্যে ১২৪ জন নারী। প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে মাসে গড়ে ৫০০ রোগীকে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকের সার্ভিস প্রোভাইডারগণ একটি প্রকল্পের আওতায় বেতন ভাতা পাচ্ছেন। তাদের চাকুরী রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে এ কারণে নিয়মিত বেতন-ভাতা বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাদের বেতন ভাতা পরিশোধে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. কবির হাসান জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সার্ভিস প্রোভাইডাদের বেতনভাতা ঢাকা থেকে সরাসরি উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে বিষয়টি আমার অফিসের সাথে সম্পর্কিত নয়। তবে খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারা এখনও প্রকল্প থেকে বেতন-ভাতা পান তাই হয়তো বেতন-ভাতার বার্ষিক প্রবৃদ্ধির থেকে বঞ্চিত রয়েছেন তবে তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর হলে এ সমস্যার সমাধান হবে।
এসএইচ/এমআর