আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আমতলী পৌরসভা সংলগ্ন চাওড়া বাঁশতলা এলাকার শেখ হাসিনা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের পুর্ব পাশের বাউন্ডারী লাগোয়া ইউসুফ জামানের বাড়ীর খেচিগেটের তালা ও দরজা ভেঙ্গে ডাকাতি সংঘঠিত হয়েছে। ডাকাতদল ঘরের ৭ সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। ডাকাতদল ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার লুট করে নিয়েছে। গুরুতর আহত ইউসুফ জামান ও তার মেয়ে নুশরাত জাহান সারাসহ অন্য আহতদের প্রতিবেশীরা আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সংঙ্কটজনক অবস্থায় সারাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। ঘটনা ঘটেছে রবিবার গভীর রাতে। এ ঘটনায় সোমবার আমতলী কিশোর গ্যাংয়ের এক লিডারকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে পুলিশ সুত্রে জানাগেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।
জানাগেছে, আমতলী পৌরসভা সংলগ্ন চাওড়া বাশতলা এলাকার শেখ হাসিনা টেকনিক্যাল স্কুল এবং কলেজের পুর্ব পাশের বাউন্ডারী লাগোয়া ইউসুফ জামানের বাড়ীতে বরিবার গভীর রাতে মুখোশধারী একদল ডাকাত সাবল দিয়ে ব্লিডিং’র খেচিগেটের তালা ও দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। পরে ডাকাতদল গৃহকর্তা ইউসুফ জামান ও তার স্ত্রী ফিরোজা বেগমকে ওড়না দিয়ে রেধে তাদেরসহ ঘরে অন্যান্য সদস্যদের বেধরক মারধর করে নগদ ৬৬ হাজার টাকা ও তিন ভরি স্বর্নালংকার ও আটটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এদিকে ওই ভবনের পাশে গৃহকর্তা ইউসুফ জামানের কন্যা নুশরাত জাহান সারার কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ডাকাতরা তাকে মারধর করে। এ সময় সারা নিজেকে রক্ষায় এক ডাকাতের অন্ডকোষ চেপে ধরে। নিরুপায় হয়ে ওই ডাকাত রাকিব ও রাসেল নামের দুই ডাকাত সদস্যকে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করে। পরে ইউসুফ জামানের কক্ষ থেকে ডাকাতদল সারার কক্ষে এসে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এবং তার ঘরে থাকা টাকা ও স্বর্নালংকার নিয়ে যায়। তাকে আঘাতের রক্তাক্ত ছোপ ছোপ চিহৃ ফ্লোরে পরে আছে।ওই রাতের প্রতিবেশীরা ইউসুফ জামান (৬৭) ও তার মেয়ে নুশরাত জাহান সারাসহ (৩২) অন্য সদস্যদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ মেহেরিন আশ্রাফ সারাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছে। অপর আহত তামান্না (২৪), ইন্নি (১৮) নাঈম (৩৫) আরশি (৮) ও ফিরোজা বেগমকে (৬২) প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সোমবার সকালে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে কিশোর গ্যাংয়ের এক লিডারকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে পুলিশ সুত্রে জানাগেছে। তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। খবর পেয়ে রাতেই আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু এবং সোমবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক ও ডিবির ওসি বশির আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আমতলীর কিশোর গ্যাংরাই এমন অপকর্মের সাথে জড়িত। তাদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই মুল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
আহত ইউসুফ জামান বলেন, মুখোশধারী ৭/৮ জনের ডাকাত দল রাত আড়াইটার দিকে সাবল দিয়ে ব্লিডিং’র মুল ফটকের খেচিগেটের তালা ও দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। পরে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে লুঙ্গি ও ওড়না দিয়ে বেঁধে মারধর করে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের পিটিয়েছে। ডাকাত দলের একজন আমার মেয়ে নুরশাত জাহান সারার কক্ষে গিয়ে মারধর করে টাকা ও স্বর্নালংকার চায়। এ সময় আমার মেয়ে এক ডাকাতের অন্ডকোষ চেপে ধরে। ওই ডাকাত বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করে রাকিব ও রাসেল নামের দুই ডাকাত সদস্যকে ডাকতে থাকে। পরে ডাকাতদল ওই কক্ষে গিয়ে আমার মেয়ে সারাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মেহেরিন আশ্রাফ বলেন, গুরুতর আহত নুশরাত জাহান সারাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর আহতদের চিকিৎসা দেয়া হয়।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আনা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দ্রুত এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।
এমএইচকে/এমআর