চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির(চাল) বিতরণে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশংকা রয়েছে। চরফ্যাশনের হতদরিদ্র পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ১০টাকার চাল পেয়ে আল্লাহর কাছে শোকরানা আদায় করছেন। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যতদিন বাচবে তারা তাকে ততদিনই ভোট দিবে। শেখ হাসিনার কারণে যে মুহুত্বে বাজারের ৪৫/৫০টাকা চাল বিক্রি হয়েছে তখন থেকে আমাদের গরীবদের জন্য ১০টাকা করে চাল খাওয়াচ্ছে স্থানীয় ডিলারদের মাধ্যমে। বর্তমানে নিচ্ছে ১৫টাকা। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই চাল নিয়ে নয়ছয় চলবেনা উল্লেখ করে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও)) নওরীন হক ডিলারদের হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া হতদরিদ্রের চাল নিয়ে কোন অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট ডিলারদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চর মাদ্রাজের বেড়িবাঁধের রোকশানা বেগম,জিন্নাগড়ের রহিম আলী,আসলামপুর আবুগঞ্জ বাজার এলাকার ছালেখা বেগম বলেন, যে মুহুত্বে বাজরের চাউল ৪৫/৫০টাকা। আর আই(আমি)আংগো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩০কেজি করে চাইল আমাদেরকে দিচ্ছে মাত্র ১০টিয়া, এখন ডিলারেরা নিচ্ছে ১৫টিয়া। তিনি আমাদের দরদী মমতামহী মা’ তার উদারতায় সংকটময় সময়ে কমদামে চালে পাচ্ছি। আমরা তাঁর জন্য প্রাণ ভরে দোয়া করি। আল্লাহ যেন তাকে হয়াত বাড়িয়ে দিয়ে ক্ষমতা রাখে। আমরা আগে বিএনপি করতাম অনেকে। এখন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কাকে ভোট দিবো। এমন উক্তি চাউল পাওয়া সকল পরিবারগুলোর।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এসব চাল নিয়ে নয় ছয়, চরফ্যাশন উপজেলা ডিলারদের অনিয়ম নিয়ে তাৎক্ষণিক তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিয়েছেন ইউএনও। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) নওরীন হক বলেন, চরফ্যাশন উপজেলাস্থ জিন্নাগড় ইউনিয়নের ডিলার মোঃ জাহিদুল ইসলাম, আ ফ ম আরিফ ও মোঃ রুবেল এর বিরুদ্ধে চাল বিতরণের সময় ওজনে কম দেয়ার ও টাকা বেশি নেয়ার অভিযোগ অবগত হওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে সতর্কীকরণপূর্বক সহকারী কমিশনার (ভূমি), চরফ্যাশন ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে চাল বিতরণের নির্দেশ প্রদান করি। পরবর্তী বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্টি একটি কমিটি গঠন করি। উক্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করি। শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের ডিলার আব্দুল্লাহ আল মাসুম এর বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উক্ত ডিলার আব্দুল্লাহ আল মাসুম-কে ডিলারশীপ হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই চাল নিয়ে কেউ নয়ছয় করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
এছাড়াও দুলারহাট থানার মুজিবনগর ইউনিয়নে ডিলার জনাব মোঃ রুবেল-কে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ তদারক কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে নিজেই চাল বিতরণ করেছেন মর্মে উল্লিখিত অভিযোগটির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানিয়েছেন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি অযৌক্তিক। কেননা ডিলার মোঃ রুবেল বিগত ১৫ জুন ২০২৩ তারিখ ডিলারশীপ হতে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। মুজিবনগর ইউনিয়নে একজন মাত্র ডিলার হওয়ায় এবং তিনি অব্যাহতি নেয়ায় খাদ্য বান্ধব নীতিমালা-২০১৭ অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী নুরাবাদ ইউনিয়নের ডিলার জনাব মোঃ মনির হোসেন এর মাধ্যমে চাল উত্তোলন ও বিতরণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত ১৬ আগস্ট চরফ্যাশন উপজেলার ৫১জন খাদ্যবান্ধব ডিলারদের নিয়ে একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সভায় কার্ডধারীদের নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে (৪৫০টাকা) এবং নির্দিষ্ট পরিমান (৩০ কেজি) চাল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিতরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ট্যাগ অফিসারদের বিতরণের নির্ধারিত দিনে উপস্থিত =ৎ]
াকার জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও নওরীন হক জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অনন্য উদ্যোগ। জনবান্ধব এ কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম কোন ভাবেই কাম্য নয়। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে চাল বিতরণের জন্য নির্ধারিত দিনে সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট ডিলার ও ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে সমন্বয়পূর্বক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ মহতি উদ্যোগকে বাস্তবায়নের জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
কেএস/এমআর