আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
স্ত্রীর পরকিয়ায় বাঁধা দেওয়ায় স্ত্রী শাহিদা পারভীন (৩৫) স্বামী আহসান হাওলাদারকে পুরুষাঙ্গ টেনে ছিড়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। আহত আহসানকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। অভিযুক্ত মায়ের বিচার চাইলো মেয়ে। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার চালিতাবুনিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে।
জানাগেছে, ২০০৫ সালে আমতলী উপজেলার চালিতাবুনিয়া গ্রামের আহসান হাওলাদারের সঙ্গে গুলিশাখালী গ্রামের মোতালেব হাওলাদারের কন্যা শাহিদা পারভীনের বিয়ে হয়। তিন সন্তানের জননী শাহিদা গত পাঁচ বছর পুর্বে একই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য হারুন অর রশিদ ঘরামীর সাথে পরকিয়ার জড়িয়ে পড়ে। স্ত্রীর এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেন স্বামী আহসান হাওলাদার। কিন্তু তাতে স্ত্রী শাহিদা নিভৃত হয়নি। প্রেমিক হারুন অর রশিদের নির্দেশে শাহিদা তার স্বামীকে প্রায়ই নির্যাতন করে আসছে এমন অভিযোগ আহসান হাওলাারের। বৃহস্পতিবার রাতে শাহিদা তার প্রেমিক হারুন অর রশিদের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিল। কিন্তু স্বামী আহসান এতে বাঁধা দেয়। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ওইদিন রাত দুইটার দিকে ঘুমন্ত স্বামীকে যাতা (ছরতা) দিয়ে মাথায় আঘাত এবং পুরুষাঙ্গ টেনে ছিড়ে রক্তাক্ত জখম করে। তার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে স্ত্রী শাহিদা পারভীন পালিয়ে যায়। আহত আহসানের অভিযোগ, তার স্ত্রী শাহিদা পারভীন গত পাঁচ বছর ধরে অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা সদস্য হারুন অর রশিদের সাথে পরকিয়ার জড়িয়ে পরে। ওই পারকিয়ার বাঁধা দেয়ায় তাকে বেশ কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হারুনের নির্দেশে শাহিদা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে যাতা দিয়ে মুখমন্ডলে আঘাত এবং পুরুষাঙ্গ টেনে ছিড়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। খবর পেয়ে ওই রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল যায়। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছে। শুক্রবার দুপুরে তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পরপরই স্ত্রী শাহিদা বেগম পলাতক রয়েছে।
আহসানের ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া কন্যা বলেন. আমার মা পরকিয়ায় জড়িয়ে বাবাকে বেশ কয়েকবার মারধর করেছে। গতকাল রাতে ঘুমন্ত বাবাকে যাতা দিয়ে মেরে রক্তাক্ত জখম করেছে। মায়ের এমন জঘন্য ঘটনা মেনে নেয়া যায়না। আমি আমার মায়ের বিচার দাবী করছি।
অভিযুক্ত শাহিদা পারভীন পলাতক ও মোবাইল বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য হারুন অর রশিদ ঘরামী পরকিয়ার সম্পর্ক অস্বীকার করে বলেন, মারধরের ঘটনা শুনেছি। তিনি আরো বলেন, আমার সাথে ওই নারীর মোবাইলে কথা হয়।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ জায়েদ আলম ইরাম বলেন, রোগীর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। তার পুরুষাঙ্গের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহৃ রয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর