আমতলীতে নির্মাণের এক মাসেই সড়কে খানাখন্দ!

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে নির্মাণের এক মাসেই সড়কে খানাখন্দ!
সোমবার ● ২৮ আগস্ট ২০২৩


আমতলীতে নির্মাণের এক মাসেই সড়কে খানাখন্দ!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

সড়ক নির্মাণের এক মাসের মাথায় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। হাতের টান ও অটোগাড়ীর চাকায় সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে। বৃষ্টির ফোটায় সড়কে গর্ত হয়ে মাটি বের হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার নি¤œমানের কাজ করায় সড়কের এমন বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। নি¤œমানের কাজ করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী এলাকাবাসীর। ঘটনা তালতলী উপজেলায় পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সড়কে।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলার পচাঁকোড়ালীয়া ইউনিয়নের স্লুইজবাজার জিপিএস হইতে চেয়ারম্যানহাট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়ক। এ সড়ক নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বরগুনা ২০১৯-২০ অর্থবছরে দরপত্র আহবান করে। দুইধাপে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৩৯ হাজার ২৪ টাকা ব্যয়ে ওই কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স দেলোয়ার হোসেন-মোমিনুল হক (জেভি) ও মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ওই অর্থ বছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা কিন্তু ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন-মোমিনুল হক ২০২০ সালের শেষের দিকে কাজ শুরু করে। কিছুদিন কাজ করে ওই কাজ তারা বন্ধ করে দেয়। প্রায় ছয় মাস ঠিকাদার কাজ ফেলে রাখে বলে জানান স্থানীয়রা। এ ঠিকাদার কাজ করতে অসম্মতি প্রকাশ করায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পুনরায় ওই কাজের দরপত্র আহবান করে। দ্বিতীয় দরপত্রে কাজ পায় বরগুনার মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ী এ বছরের ৩০ জুন সড়কের কাজ সম্পন্ন করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নির্মাণের এক মাস যেতে না যেতেই সড়কটি খানাখন্দে পরিণত হয়। হাতের টান ও অটোগাড়ীর চাকায় সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে। বৃষ্টির ফোটায় সড়কে গর্ত হয়ে মাটি বের হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার নি¤œমানের কাজ করায় সড়কের এমন বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। নি¤œমানের কাজ করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী এলাকাবাসীর। স্থানীয়দের অভিযোগ বৃষ্টির মৌসুম যেতে না যেতেই এ সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যাবে।
সাবেক ইউপি সদস্য জাফর মৃধা বলেন, সড়ক যেন ডোবায় পরিনত হয়েছে। এর চেয়ে আগেই ভালো ছিল।  সড়ক নির্মাণে অনিয়মের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবী করছেন তিনি।
পচাঁকোড়ালীয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আবু জাফর খোকন হাওলাদার বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ এবং ঠিকাদারের কারসাজিতে সড়কের এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে। সড়কে যে অবস্থা তাতে এ বৃষ্টির মৌসুমই উঠবে না।
পচাঁকোড়ালীয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, নির্মাণ শুরুতেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছে ঠিকাদারের নি¤œমানের কাজের বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু তারা তা আমলে নেয়নি। এলজিইডি ও ঠিকাদারের যোগসাজসে সড়কের এমন নি¤œমানের কাজ হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মহিবুল ইসলাম তনু বলেন, সড়কটির কাজ আমি করিনি, আমার লাইসেন্সে মোঃ ফরহাদ জোমাদ্দার নামের এক ঠিকাদার কাজ করেছে। রাস্তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কেও তিনি অবগত নন বলে জানান।
সাব ঠিকাদার ফরহাদ জোমাদ্দার সড়কে খানাখন্দের কথা অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়মানুসারে আমি কাজ করেছি। আমার কাজে কোন ক্রটি ছিল না।
এলজিইডি’র তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইমতিয়াজ হোসাইন রাসেল বলেন, আগামী সপ্তাহে নির্বাহী প্রকৌশলী ওই রাস্তাটি পরিদর্শনে আসবেন। তিনিই পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ওই সড়ক নির্মাণের অনিয়মের বিষয়ে আমার কাছেও অভিযোগ এসেছে। বরগুনা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জী বলেন, ওই সড়ক পরিদর্শনে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪০:১৭ ● ১০৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ