কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য ও জালিয়াতির অভিযোগে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ইউসুফপুর বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি ওমর ফারুক আকনের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির ১১সদস্যের আট জন অনাস্থা দিয়েছেন। মাদ্রসা শিক্ষা বোর্ডে দেয়া অনাস্থা প্রস্তাব ও দুর্নীতির বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পটুয়াখালী জেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। সম্প্রতি জেলা শিক্ষা অফিসার মুহা মুজিবুর রহমান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার সরেজমিনে মাদ্রাসায় গেলে সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সুপারের উপস্থিতিতে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা অবৈধভাবে চারজন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরেন। একারণে সভাপতির বিরুদ্ধে তারা অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো’র (ব্যানবেইস) ওয়েভ সাইটে এ মাদ্রাসার ২০২১ সালের শিক্ষক প্যাটার্ণে ১৪ জন শিক্ষক কর্মচারীর তথ্য রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি ২০২২ সালের প্যাটার্ণে ১৭ জন দেখানো হয়েছে। যেখানে মরজিনা নামের একজন শিক্ষককে বাদ দিয়ে সহশিক্ষক হিসাবে আল-আমিন, লাইব্রেরিয়ান হিসেবে আসমা, করনিক হিসেবে ইব্রাহিম ও অফিস সহকারী হিসেবে শিমুল খানকে যুক্ত করা হয়েছে। এদেরকে ২০০৫, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে নিয়োগ দেখানো হলেও ব্যানবেইসের তথ্য ভান্ডারে ২০২২ সালের আগে তাদের নাম নেই।
মাদ্রসার বিদ্যোৎসাহী সদস্য বদরুল আলম জানান, মাদ্রসা সুপার শফিকুল ইসলাম সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পরে ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা হাবিবুর রহমান ও সভাপতির যোগসাজশে সাব্কে সুপার, তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সই জালিয়াতি করে উক্ত চার জনকে ব্যাকডেটে নিয়োগ দেখিয়ে অন্তত ৩০ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছেন।
অভিভাবক সদস্য হাফেজ আব্দুস সালাম জানান, তিনি এক যুগের বেশি সময় মাদ্রসার ম্যানেজিং কমিটিতে রয়েছেন। অবৈধভাবে নিয়োগ দেখানো এই চার জনকে আগে কখনও মাদ্রাসায় দেখেন নি। প্রতিষ্ঠাতা সুপারের মৃত্যুর পরেই জানতে পারেন চারজনের নিয়োগের কথা। বিষয়টি ভুল হয়েছে দাবি করে ম্যানেজিং কমিটির সভায় ভারপ্রাপ্ত সুপার ক্ষমা চেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফারুক আকন জানান, তার সময়কালে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আর অন্যসব অভিযোগ মিথ্যা ও মনগড়া।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা হাবিবুর রহমান জানান, নতুন প্রতিষ্ঠানের কিছু ভুলত্রুটি থাকতে পারে। মূলত সুপার নিয়োগ নিয়ে বিরোধের কারণে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি সঠিক নয়।
পটুয়াখালী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহা মুজিবুর রহমান জানান, বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হবে। তদন্তাধীন বিষয় উল্লেখ করে তিনি কোন মতামত ব্যক্ত করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউসুফপুর বালিকা দাখিল মাদ্রাসাটি ২০২২ সালে এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে প্রথম শেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৪২৭ জন ছাত্রী রয়েছে বলে ভারপ্রাপ্ত সুপার নিশ্চিত করেন।
এমইউএম/এমআর